অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মাহে রমজান উপলক্ষে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ

0
5
অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মাহে রমজান উপলক্ষে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ

প্রকাশিত : শুক্রবার ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, খ্রিষ্টাব্দ।। ১৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ( বসন্ত কাল)।। ২৮ শাবান, ১৪৪৬ হিজরী।

বিক্রমপুর খবর : মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি : আজ (২৮ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার) অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন মুন্সিগঞ্জ (শাখার) কেন্দ্রের উদ্যোগে আসন্ন পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সংগঠনটির মুন্সিগঞ্জ শহরের মালপাড়ায় অবস্থিত জ্ঞানপীঠ ও স্বদেশ গবেষণাগার বিক্রমপুর ভবনে আজ সকালে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে এই ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক এবং মুন্সিগঞ্জ কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হাসান, ইফতার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানের আহবায়ক মো: মহিউদ্দিন তালুকদার, সদস্য সচিব মো: সাইফুল ইসলাম বাদল, সদস্য মো: মামুন হোসাইন, শাহরিয়ার জহির,আবিদ হোসাইন, অভি, সজল, সাগর, ইব্রাহিম, রুহুল আমিন ইয়ামিন প্রমূখ । উল্লেখ্য এরা সকলেই অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের সদস্য।

এই সংগঠনটির হাঁটি হাঁটি পা পা করে ২৫ বছর পার করেছে কেন্দ্রীয় পর্ষদ ছাড়া মুন্সিগঞ্জ জেলায় ৫টি উপজেলায় ৫টি শাখা আছে।
শীতের রাতে শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে সংগঠনটির পক্ষ থেকে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে, প্রতি বছর কৃতি শিক্ষার্থী ও গুণীজনদের সংবর্ধনার আয়োজন করে, প্রত্যেকটি জাতীয় অনুষ্ঠান উদযাপন করা সহ সামাজিক নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে।
উল্লেখযোগ্য হল- ১. লৌহজং উপজেলার কনকসারে ‘রহমান মাস্টার স্মৃতি পাঠাগার’ স্থাপন করার মাধ্যমে সংগঠনটি তার সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করে। ‘রহমান মাস্টার স্মৃতি পাঠাগার’ মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ পাঠাগারগুলোর মধ্যে অন্যতম।
২. মুন্সীগঞ্জের মালপাড়ায় স্থাপন করা হয়েছে ‘জ্ঞানপীঠ স্বদেশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান’ ও ‘আনন্দপাঠ’ নামে একটি পাঠাগার। এছাড়াও এ কার্যালয়ে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র রয়েছে যার মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কণ, আবৃত্তি, গান ও অভিনয়সহ অন্যান্য শিশুতোষ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
৩. বিক্রমপুর অঞ্চলের ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রদর্শনে শ্রীনগরের বালাসুরে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ‘বিক্রমপুর জাদুঘর’। এছাড়াও এখানে মুক্তিযুদ্ধের দুই শহীদের নামে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ‘মুনীর আজাদ স্মৃতি পাঠাগার।
৪. লৌহজং এ স্থাপিত করা হয়েছে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এই কেন্দ্রের উদ্যেগে গত দুই দশক ধরে কিশোর কিশোরিদের জন্য একটি গান ও নাচের স্কুল চালু আছে।


৫. অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রতি বছর সকল উপজেলার কৃতী শিক্ষার্থী ও গুণীজন সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে এই সম্মাননার প্রবর্তন করা হয়েছে। একই অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, রত্নগর্ভা মা’সহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশায় অনন্য অবদান রাখা গুণী ব্যক্তিবর্গকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। কোভিডের কারণে নিয়মিত কৃতী শিক্ষার্থী ও গুণীজন সম্মাননা ব্যহত হয়েছে।
৬. অগ্রসর বিক্রমপুরের উদ্যেগে পারিচালিত হচ্ছে সব চাইতে তাৎপর্যপূর্ণ কর্মসূচি ‘বিক্রমপুর অঞ্চলে প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান ও খনন’ প্রকল্পের কাজ। এই খনন ও গবেষণা কাজ সম্ভব হচ্ছে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান এবং প্রত্নতত্ত্ব গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ঐতিহ্য অন্বেষণ’র ঐকান্তিক সহযোগিতায়। বস্তুত প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান, খনন ও সংরক্ষণ কাজটি তারাই করছে। ২০১০ সাল থেকে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার ‘রঘুরামপুরে’ খনন কাজ শুরু হওয়ার পর সেখানে আবিস্কৃত হয়েছে হাজার বছর আগের বৌদ্ধ বিহারের অংশ বিশেষ। ঘন বসতি থাকায় সীমিত জায়গায় খনন করে ‘বিক্রমপুরপুরী’ বিহারের অংশ বিশেষ গভীর মাটির নীচ থেকে উদ্ধার ও সংরক্ষণ করা হয়েছে। রঘুরামপুর বিহার সংলগ্ন স্থানে অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের নিজস্ব অর্থায়নে জায়গা কিনে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে একটি ‘উন্মুক্ত জাদুঘর’ ও ভেষজ বাগান। উল্লেখ্য যে, রঘুমামপুরের অনতি দূরে রয়েছে জগত বিখ্যাত বৌদ্ধ পন্ডিত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানের জন্মভিটা। শৈশবে অতীশের প্রাথমিক শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জন হয় এই বিক্রপুরী বিহারে।
৭. ২০১৩ সাল থেকে টঙ্গীবাড়ি উপজেলার নাটেশ্বরে খনন শুরু হয়। নাটেশ্বরে প্রায় ১০ একর জায়গাজুড়ে খননের মাধ্যমে আবিস্কৃত হয়েছে একটি মন্দির নগরী। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখনন এলাকা, কেন্দ্রীয় মন্দিরের চারপাশে ১৬টি স্তুপ, পাকা রাস্তা, বসত ঘরের ভিটে, স্নানঘর, মন্দিরের চারপাশের রাস্তা ও জল নিকাশি ব্যবস্থা। অগ্রসরের আমন্ত্রণে এখানে চীনের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক টিম পর পর তিন বছর খনন অংশগ্রহণ করেছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নাটেশ্বর মন্দির নগরী বিশ্ব প্রত্ন ঐতিহ্য হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে। এই প্রত্নমন্দির এলাকাটি সংরক্ষণ এবং বিশ্বের পর্যটকদের বিশেষত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চীন সরকার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রত্নস্থান সম্পর্কিত বিস্তারিত বিবরণ ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান দেবেন।

বিক্রমপুর জাদুঘর কমপ্লেক্স

৮. অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন ২০১৩ সালে শ্রীনগর উপজেলার বালাসুর স্থানে ‘বিক্রমপুর জাদুঘর’ প্রতিষ্ঠা করেছে। এটি মুন্সীগঞ্জ জেলার একমাত্র জাদুঘর। প্রায় ১৩ একর জায়গার (সরকারের মালিকানাধীন অর্পিত সম্পত্তি) এই জাদুঘর দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে। এখানে জাদুঘর ও গেস্ট হাউজ পান্থশালা নির্মাণ করে দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। জাদুঘর ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা, যাবতীয় সংগ্রহ এবং প্রদর্শনের যাবতীয় কার্যাবলী করে যাচ্ছে অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন।
৯. জেলার লৌহজং-এর কনকসারে স্থাপিত হয়েছে বেসরকারি উদ্যোগে অন্যতম বৃহৎ গবেষণা পাঠাগার, ‘বঙ্গীয় গ্রন্থ জাদুঘর’। সংগঠনের নিজস্ব উদ্যোগে ও অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘বঙ্গীয় গ্রন্থ জাদুঘর’। এখানে প্রাচীন তালপাতার পুঁথি, হাতে বানানো কাগজে লেখা পুঁথিসহ শতাধিক বছরের পুরনো বই, ম্যাগাজিন, সাহিত্য পত্রিকাসহ প্রায় ১৫ হাজার বইয়ের সংগ্রহ রয়েছে। গবেষকদের জন্য রয়ছে থাকার ব্যবস্থা। বঙ্গীয় গন্থ জাদুঘর ‘পথরেখা’ নামে একটি উচ্চমানে সমাজ-সাহিত্য, অর্থনীতি বিষয়ক গবেষণাধর্মী গ্রন্থ পত্রিকা প্রকাশ করছে। বঙ্গীয় জাদুঘরের কেন্দ্রীয় কমিটিতে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লেখক-গবেষক সদস্য হিসেবে রয়েছেন। বিক্রমপুর অঞ্চলের ইতিহাস ঐহিহ্য তুলে ধরার লক্ষ্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হতে ‘অগ্রসর বিক্রমপুর’ নামে একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে।

১০. কনকসারে অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবস্থিত। সংগঠনের সভাপতি নূহ-উল-আলম লেনিন ও তার ভাই বোনেরা উত্তরাধিকার হিসেবে পাওয়া বাড়িটির প্রায়২১ শতাংশ জায়গা অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনে দান হিসেবে রেজিস্ট্রি করে দেন। অগ্রসর বিক্রমপুরের এই নিজস্ব জায়গায় একটি ক্ষুদ্রায়াতনের চারতলা ভবন নির্মাণ করে দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এই ভবনের নীচ তলায় রয়েছে বাংলাদেশের প্রথম চলচিত্র পরিচালক আব্দুর জব্বার খানের নামে একটি মুক্ত মঞ্চ। দোতলায় রয়েছে অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। তিন ও চার তলায় ৪টি কক্ষ প্রধানত বঙ্গীয় গ্রন্থ জাদুঘরের গবেষক/ফেলোদের জন্য সংরক্ষিত। কনকসারে রয়েছে এই উপজেলার প্রধানতম কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
১১. অগ্রসর বিক্রমপুর দারিদ্র বিমোচন সহায়ক প্রকল্পের অধীনে সদস্যদের দানে সংগৃহীত অর্থে দুঃস্থদের মাঝে ছাগলের বাচ্চা বিতরণ করছে।

১২. মুন্সীগঞ্জ শহরের মালপাড়ায় একটি পরিত্যাক্ত দ্বিতল ভবন সংস্কার করে স্থাপন করা হয়েছে ‘স্বদেশ গবেষণা কেন্দ্র’। গবেষণা ও মৌলিক লেখা লেখিকে উৎসাহিত করার জন্য এখানে একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে। এই ভবনের নীচতলায় রয়েছে শিশু-কিশোরদের একটি ছবি আকা, গান শেখা ও আবৃত্তি শেখার স্কুল। নিচতলার অন্য একটি কক্ষে রয়েছে ‘আনন্দ পাঠ নামক শিশু কিশোর পাঠাগার।

১৩. অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন উপজেলা শাখার উদ্যোগে:
– ১ লা বৈশাখ: বর্ষ বরণ অনুষ্ঠান
– ২৫ বৈশাখ ও ১১ জ্যৈষ্ঠ রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী
– ২১ ফেব্রুয়ারি: শহীদ দিবস উদযাপন
– ২৬ মার্চ : স্বাধীনতা দিবস
– ১৬ ডিসেম্বর: বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালন করে থাকে।

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..           

‘‘আমাদের বিক্রমপুরআমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুনবিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’
Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com
আমাদের পেইজ এ লাইক দিন শেয়ার করুন।
জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor
email – bikrampurkhobor@gmail.com

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন