২২ ডিসেম্বর ২০১৮
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করতে সিলেট পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার সকাল ১০টা ৪৭ মিনিটে তাকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইট বিজি-১২১১ সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সকাল ১০টা ২২ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমান হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
এর আগে ৩০ জানুয়ারি সিলেটে তিন আউলিয়ার মাজার জিয়ারত শেষে আলিয়া মাদরাসা মাঠে জনসভার মাধ্যমে সিলেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
ওসমানী বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল (রহ:)’র মাজার জিয়ারত করতে রওনা দিয়েছেন। মাজারে তাকে স্বাগত জানাতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত রয়েছেন।
এরপর তিনি হযরত শাহপরান (রহ:) ও নগরের কুশিঘাটে সিলেটের প্রথম মুসলমান হযরত গাজী বুরহান উদ্দিন (রহ:)’র মাজার জিয়ারত করবেন।
মাজার জিয়ারত শেষে শেখ হাসিনা সিলেট সার্কিট হাউসে বিশ্রাম ও মধ্যাহ্নভোজের পর দুপুর আড়াইটায় সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন। এ লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও শেখ হাসিনার জনসভা ঘিরে রেখেছে বাড়তি সতর্কতা।
জনসভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা,সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা এবং সিলেটের বিভিন্ন আসনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোট মনোনীত প্রার্থীরা উপস্থিত থাকবেন। এর আগে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি সিলেটবাসীর জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে নৌকায় ভোট চেয়ে প্রাক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
আজ শনিবার সিলেটের জনসভা সফল করতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে একটি অগ্রবর্তী টিম সিলেটে আসে। এই টিমে আছেন আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার। এই টিম শুক্রবার রাতে জনসভাস্থল পরিদর্শন করেন ও সংশ্লিষ্টদের সাথে প্রয়োজনীয় পরামর্শ করেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়,মযার্দাপূর্ণ সিলেট-১ আসনটিতে বিজয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে একটি মিথ আছে। সরকার গঠনের ক্ষেত্রে এ আসনে জয় লাভের বিকল্প নেই এমন একটি মিথ দীর্ঘদিন থেকে চালু আছে। তাই এ আসন থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে সিলেটের প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতির এক ধরনের দুর্বলতা সব সময়ই রয়েছে। তিনি ১৯৮১ সালের মে মাসে দেশে ফিরে ঢাকার বাইরে প্রথমেই সিলেট সফর করেছিলেন এবং জনসভায় বক্তব্য দিয়েছিলেন। তাই, সিলেট-১ আসন একটি মর্যাদাপূর্ণ আসন বলে খ্যাত। স্বাধীনতার পর থেকেই এ আসনে যে দলের প্রার্থী জয় পেয়েছেন, সে দলই সরকার গঠন করেছে এমনটিই মিথ প্রচলিত রয়েছে। বিশেষ করে ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের মধ্যে শুধু সিলেট-১ আসনে বিএনপির খন্দকার আবদুল মালিক জয়ী হয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে বাকি ১৮টি আসনে দলীয় প্রার্থীরা পরাজিত হলেও সরকার গঠন করেছিল বিএনপি। তেমনিভাবে সপ্তম, অষ্টম ও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দুইবার আওয়ামী লীগ ও একবার বিএনপির প্রার্থী এ আসনে জয়ী হলে তাদের দল সরকার গঠন করে। এর মধ্যে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী (স্পিকার), ২০০১ সালে বিএনপির এম সাইফুর রহমান (অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী) এবং ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের আবুল মাল আবদুল মুহিত (অর্থমন্ত্রী) জয়ী হন। এ কারণেই আসনটি প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ।
এরবার সিলেট-১ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ভাই এ কে আবদুল মোমেন।
৩৬০ আউলিয়ার পূণ্যভূমি খ্যাত সিলেটে আছে হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহপরান (রহ.) এর মাজার। তাই,একাদশ জাতীয় নির্বাচনে হ্যাট্রিক জয়ের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাক নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছিল সিলেট থেকে। শনিবার (২২ ডিসেম্বর) মাজার জিয়ারত করে নির্বাচনি জনসভায় অংশ নিতে ৩৬০ আউলিয়ার পূণ্যভূমি যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
সফরসূচি অনুসারে,জনসভা শেষ করে বিকেল সাড়ে ৪টার বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী।