ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তস্নাত স্বপ্ন বাস্তবায়নই হলো আমাদের গণতান্ত্রিক আদর্শের অন্তর্নিহিত ইশতেহার – অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি

0
11
ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তস্নাত স্বপ্ন বাস্তবায়নই হলো আমাদের গণতান্ত্রিক আদর্শের অন্তর্নিহিত ইশতেহার – অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি

প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩১ডিসেম্বর ২০২০ইং।। ১৬ই পৌষ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ(শীতকাল।। ১৫ই জমাদিউল-আউয়াল,১৪৪২হিজরী।

বিক্রমপুর খবর : মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তস্নাত স্বপ্ন-আদর্শ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারই হলো বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আদর্শের অন্তর্নিহিত ইশতেহার। তাই ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় গণতন্ত্রের বিজয়। গণতান্ত্রিক আদর্শ ও মূল্যবোধের বিজয়। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে হলে আগে হানাদার ও স্বৈরাচারের প্রতিভূ বিএনপি-জামাত অশুভ জোটকে রাজনীতি থেকে নির্বাসনে পাঠাতে হবে।

গতকাল বুধবার ৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্রের বিজয় দিবস উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জ শহরে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনসমূহের উদ্যোগে আয়োজিত র‌্যালী ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আল মাহমুদ বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহসীনা হক কল্পনা, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা তপন, জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক মোর্শেদা আক্তার লিপি, কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, জাকির হোসেন, আব্দুল মান্নান দর্পন, ফরহাদ হোসেন আবির, অ্যাডভোকেট মাহবুর রশীদ সবুজ, মনির তালুকদার, কাউন্সিলর নার্গিস আক্তার, গজারিয়া উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সাইদ হোসেন লিটু, মনিরুল হক মিঠু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক, সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন ফরায়েজি, জেলা পরিষদ সদস্য গোলাম রসুল সিরাজী রোমান, আরিফুর রহমান আরিফ, সাইদুর রহমান খান প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময় একটি দিন। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের স্বপ্নজয়ের অভিযাত্রা শঙ্কার কালো মেঘ কাটিয়ে সমৃদ্ধির প্রদীপ্ত ঐশ্বর্য্যে প্রদীপ্ত হওয়ার দিন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ইতিহাসে একটি বিজয়ের মাইলফলক। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পক্ষে ব্যালটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পক্ষে নৌকা প্রতীকে গণ রায় প্রদান করে। স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী, ১৫ আগস্ট, জেলহত্যা ও ২১ আগস্টের খুনি এবং সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে দেশের জনগণ। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে অশুভ শক্তি, দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকদের আস্ফালন আর সহিংস রাজনীতির অন্ধকার ছায়া কাটিয়ে গণতন্ত্রের নবতর অভিযাত্রায় অগ্রসর হয় বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন স্বপ্নের পদ্মা সেতু থেকে কালো মেঘ অপসারিত হওয়ার নির্বাচন। প্রমত্তা পদ্মার বুকে চিরে বাংলাদেশের সক্ষমতা উদ্ভাসিত হওয়ার দিন। কারণ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন বানচাল হলে, আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত না হলে পদ্মা সেতুর সফল রূপায়ণ বাধাগ্রস্ত হতো। ষড়যন্ত্রকারীরা পদ্মা সেতুর অগ্রগতিতে নস্যাৎ করে দিতো। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় না থাকলে মুন্সীগঞ্জবাসীর বহু কাক্সিক্ষত পঞ্চবটি-মুক্তারপুর এলিভেটেড এক্সপ্রেস-ওয়ে প্রকল্প গৃহীত হতো না। বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের গতি স্থবির হয়ে পড়তো। পরাজিত পাকিস্তানি ভাবধারার রাজনৈতিক উত্তরসূরী বিএনপি-জামাত অপশক্তি কিংবা তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নকারী অন্য কোন অশুভ শক্তি রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে আবারও গভীর অন্ধকার আর অনিশ্চয়তার গিরিখাদে নিপতিত হতো বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র একটি আদর্শ, দর্শন, বিশ^াস, চেতনা ও মূল্যবোধের নাম। যে আদর্শ, দর্শন, বিশ^াস, চেতনা ও মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা সর্র্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ত্রিশ লাখ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে সেই আদর্শ ও মূল্যবোধ হলো বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তস্নাত স্বপ্ন-আদর্শ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারই হলো বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আদর্শের অন্তর্নিহিত ইশতেহার। তাই ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় গণতন্ত্রের বিজয়। গণতান্ত্রিক আদর্শ ও মূল্যবোধের বিজয়।

তিনি বলেন, প্রাণঘাতী মহামারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর মুখোমুখি দুর্বিষহ সময়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসা গ্রহণ শেষে আবার আমার প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি, আমার শহর, আমার লোকালয় মুন্সীগঞ্জে ফিরে আসতে পেরেছি। আপনাদের দোয়ায় এবং পরম করুণাময়ের কৃপায় আমার প্রাণের স্পন্দন মুন্সীগঞ্জের গণনমানুষের পরম সান্নিধ্যে সিক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। বিক্রমপুরের আলো-বাতাসের উষ্ণ ছোঁয়ায় অভিষিক্ত হতে পেরেছি। আমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মুন্সীগঞ্জের মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের উদ্যোগে আমার সুস্থতা কামনা করে প্রার্থনা করা হয়েছে। এজন্য আমি মুন্সীগঞ্জবাসীর প্রতি চির কৃতজ্ঞ। আপনারা আমাকে দোয়া করবেন আমি যেন সারাজীবন নিঃস্বার্থ, নিঃশঙ্ক, নির্লোভ ও নির্মোহ চিত্তে মুন্সীগঞ্জের মাটি ও মানুষের সেবা করে যেতে পারি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্ভাসিত সমাজ বিনির্মাণে নিরন্তন প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ধারাবাহিক অগ্রগতির মধ্য দিয়ে কাক্সিক্ষত অভিষ্ঠে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে ব্যাহত করার নানামুখী ষড়যন্ত্রকে পরাজিত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক গণতন্ত্রের পতাকা সমুন্নত রেখেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, এদেশের মানুষকে গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে অনেকেই শাসন-শোষণের যাঁতাকলে পিষ্ট করেছে, দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে। এদেশের মানুষ আইয়ুব মার্কা গণতন্ত্র দেখেছে, স্বৈরাচার জিয়ার কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র দেখেছে। গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে দেশকে পিছনের দিকে ঠেলে দিয়েছে একের পর এক শাসকগোষ্ঠী। ১৫ আগস্ট, ৩ রা নভেম্বর ও ২১ আগস্টের হত্যাযজ্ঞ পরিচালনাকারী ও তাদের উত্তরসূরীদের মুখে গণতন্ত্র কেবল কথার কথা।

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..            

‘‘আমাদের বিক্রমপুরআমাদের খবর

আমাদের সাথেই থাকুনবিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন