প্রকাশিত: প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৭ জুন ২০২৩।। ১৩ আষাঢ় ১৪৩০ বঙ্গাব্দ (বর্ষাকাল)।। ৮ জিলহজ, ১৪৪৪ হিজরি।। বিক্রমপুর খবর : অফিস ডেস্ক : মুসলমানদের সবচেয়ে বড় সম্মেলন পবিত্র হজের মূলপর্ব শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে আরাফাতের ময়দান সংলগ্ন মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা শুরু হয়।
এ বছর হজে খুতবা দিয়েছেন সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সদস্য শায়খ ড. ইউসুফ বিন মুহাম্মদ বিন সায়িদ।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় (বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৩টায়) শায়খ ইউসুফ বিন মোহাম্মদ হজযাত্রীদের উদ্দেশে খুতবা শুরু করেন।
খুতবার শুরুতে তিনি আল্লাহতায়ালার প্রশংসা, রাসুলুল্লাহর (সা.) ওপর দরুদ পাঠ করেন। উপস্থিত হাজীদের সুস্থতা কামনা করেন। তাদের জন্য দোয়া করেন। তিনি অনৈক্য ও ভেদাভেদ হারাম করেছেন। পবিত্র কুরআনে ঐক্য ও সংহতির গুরুত্ব সম্পর্কে বর্ণনা এসেছে। ঐক্যের মধ্যেই দুনিয়া ও আখিরাতের সব বিষয়ের সাফল্য নিহিত। মুসলমানদের পরস্পর মিলেমিশে থাকা জরুরি। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, যে কুরআনের বিষয়ে অনৈক্য করবে, সে হেদায়াত থেকে দূরে সরে গেল।…যদি আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়, তাহলে কুরআন-সুন্নাহর দিকে ফিরে আসতে আমাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কুরআনে কারিমে মুসলমানদের একসাথে মিলেমিশে বসবাস করার হুকুম দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, হে ঈমানদারগণ! আপনারা দুনিয়া ও আখিরাতের বিষয়ে আল্লাহর হুকুম মেনে চলুন। আল্লাহ তায়ালা বিভক্তি ও অনৈক্য হারাম করেছেন। সকল নবী আল্লাহর একত্ববাদের দাওয়াত দিয়েছন। তিনি এক; ইবাদতে তার উপযুক্ত কেউ নেই। আল্লাহ ছাড়া সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে।
মানুষ সবাই সমান
হজের খুতবায় শায়খ ইউসুফ বিন মোহাম্মদ আরো বলেন, আমাদের হুকুম দেয়া হয়েছে- নামাজ পড়ার, জাকাত আদায়ের ও দরিদ্রদের সহায়তা করার। পবিত্র হজও ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি রুকন। আপনারা আল্লাহর ইবাদত এমনভাবে করুন যেন তিনি আপনাদের দেখছেন। কোনো অনারবের ওপর কোনো আরবের, কোনো আরবের ওপর কোনো অনারবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই। যেভাবে এই মাসটি সম্মানিত ও হারাম ঠিক তেমনিভাবে সবার জান-মালও হারাম। দিন-রাতের বিবর্তন আল্লাহর অন্যতম এক নিদর্শন। আল্লাহর রজ্জুকে শক্তভাবে আকড়ে ধরুন। আল্লাহ হুদুদ সংরক্ষণের অর্থ হলো- আমরা শুধু তাঁরই ইবাদত করব। প্রত্যেক নবী (আ.) এই দাওয়াত-ই দিয়েছেন যে- এক আল্লাহর ইবাদত করো, নামাজ পড়ো, জাকাত দাও। জাকাত ও হজের হুকুম স্বয়ং আল্লাহ দিয়েছেন।
গোনাহের কাজে সহযোগী হইয়ো না
খুতবায় খতিব আরো বলেন, উত্তম আচরণের মাধ্যমে অন্যের হৃদয়ে জায়গা করে নেয়া যায়। মুসলমানের জন্য উত্তম চরিত্র অবলম্বন করা জরুরি। পবিত্র শরিয়তের উদ্দেশ্য হলো- মুসলমান একে অপরের সাথে মিলেমিশে থাকুক। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- শিরক করো না। মা-বাবার সাথে উত্তম আচরণ করো। গোনাহের কাজে সহযোগী হইয়ো না। তাকওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করো। শয়তান চায়- মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি হোক। ইসলামে সব শিক্ষা রয়েছে, যা মুসলমানদের এক ও অভিন্ন করে রাখে। শরিয়েতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে ঝগড়া-বিবাদকারীদের বোঝানোর জন্য। ইরশাদ হয়েছে- আল্লাহর হুকুম মান্যকারী উম্মাহ এক ও অভিন্ন।
বিশ্বের ৩০ কোটির বেশি মানুষের কাছে ইসলামের শান্তিপূর্ণ বাণী পৌঁছে দিতে ২০ টি ভাষায় হজের খুতবার অনুবাদও সম্প্রচার করা হয়েছে।
হিজরি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, প্রতি বছর আরবি জিলহজ মাসের ৯ তারিখ আরাফাত ময়দানে হজের খুতবা অনুষ্ঠিত হয়। এই আরাফাতের ময়দানেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।
করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে এ বছর রেকর্ডসংখ্যক মুসল্লি পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরবে জড়ো হয়েছেন। এ বছর ২৫ লাখ মুসল্লির সমাগম ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২২ হাজার ২২১ জন মুসল্লি হজ পালন করতে গেছেন।
(বিজ্ঞাপন) https://www.facebook.com/3square1
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর-আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন-বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’
নিউজ ট্যাগ: