প্রকাশিত:সোমবার,১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ::বিক্রমপুর খবর::
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ এই সভার আয়োজন করে গতকাল রবিবার (১৩ জানুয়ারি)।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় আইনজীবীদের ঐক্যবদ্ধ থেকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন নবনির্বাচিত সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির আজকের এই আলোচনা সভা থেকে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন,‘বঙ্গবন্ধু যেদিন(১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি)ফিরে এসেছিলেন সেদিন সবার মনে হয়েছিল বিজয় পূর্ণতা পেয়েছে। তারপর ৪ নভেম্বর জাতিকে সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন। খামোশ রাজনীতি চাই না,প্রকৃত গণতন্ত্র চাই।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তিনি এরই মধ্যে ১০০ বছরের বদ্বীপ পরিকল্পনা নিয়েছেন,এটি তার দূরদর্শী চিন্তাভাবনা। আমাদের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীকে সহযোগিতা করতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় থাকবো এবং অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলসহ দেশের বিভিন্ন আদালতে কমর্রত রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের পদত্যাগের অনুরোধ জানাবো।একই সঙ্গে ওইসব শূন্য পদে নতুনদের নিয়োগ দিতে পারি।এসব নিয়োগে যারা ত্যাগী তাদের সুযোগ দেওয়া হবে। কোনও হাইব্রিডকে সুযোগ দেওয়া হবে না।’
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন,‘সামনে কঠিন সময় আসছে।এ সময়েও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে।ঐক্যের নামে ড. কামাল হোসেন, মাহমুদুর রহমান মান্না,আ স ম আবদুর রব,সুব্রত চৌধুরী স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে বিলীন হয়ে গেছে। আমরা চাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি থাকবে এবং বিরোধী দলেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি নেতৃত্ব দেবে। ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলামের কেন্দ্রহীন,নেতৃত্বহীন জোট গঠন করে ভোটের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়েছিলেন,কিন্ত এতে তারা সফল হতে পারেননি।’
মন্ত্রী বলেন,‘একদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশকে শান্তির সুবাতাসে পরিণত করেছিলেন, আরেকজন বিরোধী দলীয় নেত্রী পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে সারাদেশকে বার্ণ ইউনিটে পরিণত করেছিলেন।তাই এ নির্বাচনেও সামগ্রিকভাবে ৭০ সালের নির্বাচনের ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।’
তিনি বলেন,‘১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন না হলে দেশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা পেতো না,তেমনি বঙ্গবন্ধুর সপরিবারে হত্যার পর তার কন্যা দেশে না ফিরলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেতো না।’তাই দেশ গঠনে এবারের নির্বাচনে ঘোষিত ইশতেহার অনুযায়ী দুর্নীতির বিরুদ্ধে‘জিরো টলারেন্স’অনুসরণ করা হবে বলে দৃঢ় প্রত্যায় ব্যাক্ত করেন শ ম রেজাউল করিম।
শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণেই মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ পুনর্গঠনের দিক-নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আর তখন থেকেই এ দেশে শুরু হয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধীদের ষড়যন্ত্র। দেশ স্বাধীনের পরেও যা এখনও অব্যাহত আছে। এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।’
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন,‘বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছে। আমি বিশ্বাস করি মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে ভেজা বাংলার মাটিতে আর কখনও জাতীয় সংসদে স্বাধীনতাবিরোধীরা স্থান পাবে না।’
রেলপথমন্ত্রী মো.নূরুল ইসলাম সুজন বলেন,‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে আবার রাজাকার-আল শামসরা এ দেশে ক্ষমতায় এসেছিল, যাদের জিয়াউর রহমান রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিল। অথচ পৃথিবীর কোনও দেশেই পরাজিত স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি রাজনীতি করার সুযোগ পায়নি।’
সংগঠনের সদস্য সচিব শেখ ফজলে নূর তাপসের সঞ্চালনায় এবং সংগঠনের আহ্বায়ক সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন,বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার প্রমুখ।
সভার শুরুতেই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া পাঁচ আইনজীবীকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়।আইনমন্ত্রী আনিসুল হক,গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম,রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন,শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এবং বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত হন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আইন অঙ্গন থেকে পাঁচজনকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।আসন্ন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনসহ অন্যান্য আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রীর‘ঋণ পরিশোধের’আহ্বান জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত মন্ত্রীরা তাঁদের বক্তব্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিঞ্চুতা দেখানোর অঙ্গীকার করেন।মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ পরিচালিত হবে জানিয়ে তাঁরা বলেন,সংসদে সরকারি দল থাকবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি।বিরোধী দলও হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের চেতনা ধারণকারী।মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ও চেতনা ধারণকারী কারোরই সংসদে জায়গা হবে না।