শিমুলিয়া-কাঠাঁলবাড়ী নৌরুটে ফেরি সার্ভিস বন্ধ ঘোষনা

0
8
ফাইল ফটো

প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১৯ মে ২০২০ ইং ।। ৫ই জ্যৈস্ঠ  ১৪২৭ বঙ্গাব্দ।। ২৫ রমজান ১৪৪১

বিক্রমপুর খবর : কাজী সাব্বির আহমেদ দীপু,মুন্সিগঞ্জ থেকে :: ঈদ ঘরমুখো মানুষ পদ্মা পাড়ি দিয়ে নারীর টানে যাচ্ছে গ্রামে বাড়ি। দক্ষিনাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ রাজধানী ছেড়ে আপনজনদের সঙ্গে ঈদ উৎসবে মিলিত হতে পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুঁটে যাচ্ছে নিজ নিজ গন্তব্যে। ফলে ঈদ ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বেড়েছে শিমুলিয়া ফেরিঘাটে।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২৪ মার্চ থেকে গুরুত্বপূর্ন এ নৌরুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকলেও জরুরি পরিসেবার কারনে সীমিত আকারে ফেরি সার্ভিস চালু রাখা হয়েছিল। ঈদ ঘরমুখো মানুষ গ্রামের বাড়ি ফিরতে শুরু করায় নৌরুটে প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছিল যাত্রী চাপ।

এতে করোনা সংক্রমন ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দেওয়ায় সোমবার দুপুরেই নৌ-পরিবহন মন্ত্রনায়য়ের কর্মকর্তারা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যানের নির্দেশে গেতকাল সোমবার বিকেল ৩টার পর থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম।

সড়কে-ঘাটে দুর্ভোগে যাত্রীরা
অন্যদিকে গত রোববার থেকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন করে কড়াকড়ি আরোপ করেছে আইনশৃক্সখলা বাহিনীর সদস্যরা। গতকাল সোমবার থেকে পুলিশ আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করে। এরই অংশ হিসেবে যেসব যাত্রী নিজ গাড়ি নিয়েই রওনা হয়েছে তাদের পুলিশ গন্তব্যে যেতে দিচ্ছে। আর ভাড়ায় চালিত গাড়ি ঢাকায় ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে। এ অবস্থায় সড়কে-সড়কে ও ঘাটে-ঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া দেওয়াসহ নানা দুর্ভোগের শিকার হয়ে ভায়া যানবাহনে চড়ে নিজ নিজ গন্তব্যে রওনা হয়ে যাচ্ছে ঈদ ঘরমুখো যাত্রীরা।

বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “শুনেছি, মহাসড়কে পুলিশ অনেকে যানবাহন ঢাকার দিকে ফেরত পাঠিয়েছে”। এ কারনে কিছুটা চাপ কমলেও দুপুরের পর আবারও চাপ বাড়তে শুরু করে।

হাইওয়ে পুলিশের শ্রীনগরের হাসাঁড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও পরিদর্শক আব্দুল বাছেদ জানান, “উবার, পাঠাও এবং অন্যান্য ভাড়ায়চালিত গাড়ী গুলো ঢাকায় ফেরত পাঠানো হচ্ছে। আর যেসব যাত্রী নিজেদের গাড়ী নিয়ে আসছে তাদের গন্তব্যে যেতে দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়টি মুন্সীগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) নাজমুর রায়হানও নিশ্চিত করেছেন।

করোনা নিয়ে সচেতনতা নেই যাত্রীদের
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে কোনো উদ্বেগ বা সচেতনতা নেই। ফলে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় থ্রি হুইলারে চেপে যাত্রীরা শিমুলিয়া ঘাটে যাচ্ছে। এরপর কার আগে কে ফেরিতে উঠবে, যাত্রীদের এমন প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা গেছে।

বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক আব্দুল আলীম জানান, লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধ থাকায় ফেরিতে যাত্রী চাপ পড়েছে। সামাজিক দূরত্ব উপেক্ষা করে গাদাগাদি করেই যাত্রীরা পারাপার হচ্ছে। করোনা ভাইরাস নিয়ে কোনো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নেই যাত্রীদের।

ঘাট সূত্র জানায়, কাঁঠালবাড়ী ঘাটে গিয়ে পরিবহন না পেয়ে বিপাকে পড়ছে যাত্রীরা। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় থ্রি হুইলার মাহিন্দ্রা, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেলে অধিক ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে।

যাত্রীরা জানিয়েছে, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পদ্মা পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌছাতে যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভায়া যানবাহনের মাধ্যমে গন্তব্যে যেতে হওয়ায় দ্বিগুন ভাড়া খরচ হচ্ছে যাত্রীদের। বিশেষ করে নারী, বৃদ্ধ ও শিশুরা চরম বিপাকে পড়ছে। ঝঁকি নিয়েই অনেকে রওনা হয়ে বরিশাল, খুলনা, ভোলা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছাতে দেখা গেছে। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগেও খরচ করতে হয়েছে কয়েকগুণ টাকা।

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন