প্রকাশিত:রবিবার,২৩ মে ২০২১ইং।। ৯ই জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ বঙ্গাব্দ (গ্রীস্মকাল)।
বিক্রমপুর খবর : লৌহজং প্রতিনিধি : লৌহজংয়ে সিএনজি, অটোরিকশায় চাঁদাবাজির সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার কনকসার ইউনিয়নের বটতলা বাজারে প্রকাশ্যে চাঁদা তুলছিলেন শ্রমিকলীগের নেতা কর্মীরা। এসময় তরুণ কন্ঠের জেলা প্রতিনিধি ও লৌহজং প্রেস ক্লাবে সহ-সম্পাদক মো. রাকিব শেখ সে চাঁদাবাজির ছবি তুলছিলেন। এমন সময় জাকির হোসেন (লাল বাবুর) নের্তৃত্বে কয়েকজন রাকিবের উপর রেগে যায়। এবং ছবি তুলতে বাঁধা দেয়। এক পর্যায়ে রাকিবের উপর হামলা করে। এলোপাথারি কিল-ঘুষি দিয়ে রাকিবকে আহত করেন। সে সাথে হাতে থাকা ক্যামেরা, ল্যাপটপ ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে রাকিবের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে রাকিবকে চাঁদাবাজদের হাতের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এ বিষয়ে রাকিব লৌহজং থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত চাঁদাবাজের নের্তৃত্ব দিচ্ছিলেন কনকসার ইউনিয়নের শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি জাকির হোসেন ওরফে লাল বাবু।
প্রত্যক্ষদর্শী, অটোরিক্সা, সিএনজি চালক ও স্থানীয় দোকানীরা জানান, ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে দক্ষিণবঙ্গমুখী ঈদ করতে ছুটছিলেন যাত্রীরা। ফেরি বন্ধ থাকায় কনকসার, সিংহেরহাটি, বেজগাও, হলদিয়া, শিমুলিয়াসহ বিভিন্ন স্থান দিয়ে অবৈধ ট্রলারে করে যাত্রী পারাপার হচ্ছিলো। তখন বিভিন্ন অটোরিকসা, সিএনজি এসব সড়ক দিয়ে চলাচল করে। এবং সে সুযোগে প্রতিটি অটো থেকে জাকির হোসেন লাল বাবুর নের্তৃত্বে একটি দল চাঁদা নিচ্ছিলো। অটোরিক্সা থেকে ১০ টাকা ও সিএনজি থেকে ৫০ টাকা নিচ্ছে। যদি সিএনজি অটোরিকশা চালক টাকা না দেয় তাহলে তাদের অটোরিকশা সিএনজি ভেঙ্গে ফেলে এবং মারধর করে। আর আজ রোবিবার দুপুরে এমন চিত্র দেখে সাংবাদিক মো. রাকিব শেখ ছবি তুলছিলো। রাকিবকে ছবি তুলতে দেখেই তাঁর উপর হামলা শুরু করে। আবুল কাশেম অটোচালক বলছেন, সে প্রতিদিন এ রুট দিয়ে যাতায়াত করে এবং তাকে ১০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। না দিলে অটো আটকিয়ে রাখে আর বলে এ রুট দিয়ে যাতায়াত যেনো না করি।
নির্যাতিত সাংবাদিক মো. রাকিব শেখ জানান, আমি বাসা থেকে লৌহজং প্রেস ক্লাবের দিকে যাচ্ছিলাম। ঠিক তখনি চোখে পড়ে অটো থামিয়ে চাঁদা নিচ্ছে। আমি অটো থেকে নেমে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্রথমে দেখলাম এবং ছবি তোলার জন্য আমার হাতে থাকা ডিএসএলআর ক্যামেরাটি প্রস্তুত করলাম। একটু পরে ছবি তুলতে শুরু করি এমন সময় জাকির হোসেন লাল বাবু আমাকে ছবি তুলতে দেখে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমণ করে। আমাকে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি দেয়। সে সাথে ছবি তুলে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়। তার সাথে আরও তিনচারজন ছিলো তাদের আমি চিনি না। এক পর্যায়ে আমি চিৎকার করলে স্থানীয়রা এসে আমাকে উদ্ধার করে। এবং আমি স্থানীয় হাতপাতাল থেকে চিকিৎসা নেই। আমি লৌহজং থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলমগীর হোসাইন জানান, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। লৌহজং থানা পুলিশ অভিযুক্তদের ধরার জন্য ততপর রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন। মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাব, টঙ্গীবাড়ি প্রেসক্লাব, সিরাজদিখান প্রেসক্লাব, শ্রীনগর প্রেসক্লাব ও গজারিয়া প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সে সাথে লৌহজং প্রেস ক্লাবের সভাপতি মিজানুর রহমান ঝিলু ও সাধারণ সম্পাদক মো মানিক মিয়া তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, পেশাগত দায়িত্বকালে আমার সাংবাদিক ভাইয়ের গায়ে হাত তুলেছে। একজন চাঁদাবাজের দুঃসাহস হয় কি করে। আমরা দ্রুত প্রশাসনের সহযোগিতা চাই। এ চাঁদাবাজ যদি ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার না হয় তাহলে লৌহজংয়ের সকল সাংবাদিক মানববন্ধনে নেমে যাবেন।