প্রকাশিত : শনিবার,২১ মার্চ ২০২০ ইং ।। ৭ চৈত্র ১৪২৬ বঙ্গাব্দ।
বিক্রমপুর খবর :স্টাফ রিপোর্টার মিজানুর রহমান ঝিলু-লৌহজং :মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষ-বাণিজ্য ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর দুর্নীতির অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির চারবারের নির্বাচিত অভিভাবক সদস্য আওলাদ হোসেন চলতি বছরের ৩ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ অভিযোগপত্র দেন। আর এ অভিযোগের অনুলিপি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর দেওয়া হয়েছে।
লিখিত অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ২০১০ সালের পর থেকে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ডা. মোসলেম খান মন্টু ও প্রধান শিক্ষক জহিরুল হক ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বেতনের টাকার সঙ্গে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে আসছেন।
এ ছাড়া শিক্ষক নিয়োগে ঘুষ-বাণিজ্য, বিদ্যালয়ের ফান্ডের অর্থ থেকে চেকের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের সদস্যদের টাকা ধার দেওয়া, বিদ্যালয়ের জমি নামজারির নামে অতিরিক্ত টাকা খরচ দেখানো, বিদ্যালয় সংলগ্ন বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর নামে টাকা আত্মসাৎ, উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ, বিভিন্ন ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের ফান্ডের টাকা অস্বাভাবিক খরচ করা, সভাপতির ছেলের বিয়ের জন্য বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে চেকের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ, শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির নামে টাকা আত্মসাৎ, বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করে জোর করে বিদ্যালয়ের গেটে দোকান বসিয়ে অবৈধভাবে লাভবান হওয়া, রেজুলেশন ছাড়া বিদ্যালয়ের নানা প্রয়োজন দেখিয়ে বিভিন্ন
সামগ্রী কেনাকাটায় দুর্নীতিসহ প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নানা প্রকার দুর্নীতি দিনের পর দিন করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগকারী আওলাদ হোসেন জানান, তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেউই কোনো প্রতিবাদ করতে সাহস পান না। উল্লিখিত অভিযোগের সঙ্গে বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান এক ও সাবেক দুই সদস্যসহ এলাকাবাসী একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত হলে তদন্তকারী দলের কাছে তারা মুখ খুলবেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জহিরুল হক বলেন, সব অভিযোগই ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। তবে তিনি ম্যানেজিং কমিটির কয়েক সদস্যের বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে অর্থ ধার নিয়ে ফেরত না দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি আরও বলেন, এলাকার রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।
সভাপতি ডা. মোসলেম খান মন্টু বলেন, আওলাদ যে অভিযোগ দিয়েছেন তার সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুদক, উপজেলা প্রশাসন এ অভিযোগের তদন্ত করে সত্যটা বের করুক। আমিও চাই সত্যটা বের হোক। ইতোমধ্যে আমি লৌহজং থানায় আওলাদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একটি অভিযোগ করেছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেওয়ান মো. জাহাঙ্গীর জানান, নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছি। খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাবিরুল ইসলাম খান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তবে দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যস্ত থাকায় নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বিষয়টি নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারিনি। পরে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।