লৌহজংয়ে চলছে অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য

0
5
লৌহজংয়ে চলছে অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য

প্রকাশিত: রবিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৩ ইং।। ৩০ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)।। ২৯ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি।।

বিক্রমপুর খবর : তাজুল ইসলাম রাকিব, লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) থেকে : মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার গাঁওদিয়া ইউনিয়নের রানাদিয়া গ্রামে পদ্মা নদীতে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ভরাট করা হচ্ছে কৃষি জমি। এভাবে চলতে থাকলে ফসলি জমি কমে যাবে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মেম্বার ও চেয়ারম্যানরা এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননা। অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছে পদক্ষেপ নেয়া হবে অবৈধ ড্রেজারের বিরুদ্ধে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইলিয়াস শিকদার জানান, এরই মধ্যে কয়েকটি স্থানে অবৈধভাবে কৃষি জমি ভরাটের দায়ে কয়েকবার জরিমানা করা হয়েছে। আমাদের অভিযান চলমান থাকবে ।
গতকাল রবিবার সকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। সারি সারি বাল্কহেডের উপরে বুস্টার মেশিন বসিয়ে জমি ভরাট করা হচ্ছে। অনেকেই জানান, রাত দিন ২৪ ঘণ্টাই চলে বুস্টার মেশিন। মেশিনের শব্দে অতিষ্ঠ তারা। রাস্তার উপর দিয়ে পাইপ। কোনো কোনো বাড়ির উঠান দিয়ে পাইপ নিয়েছে অনুমতি না নিয়ে। বিভিন্ন পুকুরের পাড়, কৃষি জমি, জলাশয়, বাড়ির পাশে থাকা ডোবা ড্রেজার ও ড্রাম ডেজারের সাহায্যে অপরিকল্পিতভাবে বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। অনেকেই বলেন, লিখে কোনো কাজ হবে না। যারা অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য করে তাদের উপর বড় রাজনৈতিক ব্যক্তির ছায়া আছে। বেশির ভাগ লোক ক্ষমতাশীন দলের। জানা যায়, মো. পাপ্পু মুন্সির নামে চালানো হচ্ছে গাঁওদিয়া রানাদিয়ার কয়েকটি ড্রেজার। রানাদিয়ার বাসিন্দা মো. ছামছুল বলেন, অনেক কষ্টে টাকা পয়সা জোগাড় করে এই জমিটুকু কিনেছি। নদীর পাড়ে বাড়ি। এই বাড়িতে বসবাস করছি। সরকারিভাবে জিও ব্যাগ ফেলে কিছুটা নদী রক্ষা বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। তবে বালি ভর্তি বাল্কহেড নদীর পাড়ের সবকিছু অদৃশ্য করে দিচ্ছে। রাতে ঘুমাতেও পারি না শব্দে। প্রচণ্ড শব্দ হয়। দিনরাত কাজ করে এতো শব্দ নিয়ে বাঁচব কীভাবে। প্রশাসনের কাছে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য অনুরোধ জানাই।
একই এলাকার বাসিন্দা জিসান বলেন, এখানকার বাল্কহেডের কাজে জড়িত শ্রমিকরা পানিতেই মলত্যাগ করেন। অসংখ্য শ্রমিক বাল্কহেডেও থাকে। এলাকার মেম্বারকে বলেছি, কোনো কাজ হয়নি।
মো. মোতালেব বলেন, বাল্কহেড মেশিন ও পাইপগুলো যখন নদীর পাড়ে বসানো হয় তখন আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। তখন তারা জানিয়েছিল দুই এক সপ্তা কাজ করে এগুলো নিয়ে চলে যাবে। এখন দেখি ৬-৭ মাস হয়ে গেল এগুলো সরানো হচ্ছে না।
বিষয়টি নিয়ে একাধিক ড্রেজার ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, অনেকেই তো ড্রেজার ব্যবসা করছে। আমরা যদি কাজ না করি মানুষ বাড়ি কীভাবে বানাবে। সবাই যদি কাজ বন্ধ করে আমরাও বন্ধ করব। পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন এমন প্রশ্নে তারা জানান পানিতো একদিকে যাবেই। এটা নিয়ে চিন্তার কি আছে? প্রশাসনের লোক এসে দেখে যায় তারা তো কিছু বলেনি। সাংবাদিকদের কি সমস্যা। ড্রেজার মেশিনের শব্দ হবে এটাই তো স্বাভাবিক।
মো. মরম মাদবর বলেন, দুঃখের কথা কাকে বলবো? নামাজ পড়তে যখনই দাঁড়াই শব্দে নামাজ পড়তে পারি না। দিনে রাতে সমানে কাজ করছে। রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। যদি পারেন আমাদের একটু সাহায্য করে এই কাজগুলো বন্ধ করুন। জেলা প্রশাসনকে এগুলোর প্রতি দৃষ্টি দেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
লৌহজং উপজেলা সহকারী কমিশন (ভূমি) মো. ইলিয়াস শিকদার বলেন, ওই স্থানের ড্রেজারের বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি লোক পাঠাবো। অপরিকল্পিত ড্রেজিং, কৃষি জমি, জলাশয় ভরাট নিয়ে এরই মধ্যে আমরা কয়েকটি জায়গায় আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে জরিমানা করেছি। ইউনিয়ন ভূমি অফিস কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, আমি গতকাল নদীর পাশের একটি এলাকায় গিয়েছিলাম। ভাঙন পরিদর্শন করে ওই সব স্থানে অতি দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে যে সব এলাকায় ড্রেজার বুস্টার শব্দে মানুষের অসুবিধা হয় এবং অনুুমতিহীন সব অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য বন্ধ ও উচ্ছেদ অভিযানের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হবে। খুব শিগগিরই আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য মাঠে নামব।

 

 (বিজ্ঞাপন)  https://www.facebook.com/3square1

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..             

   ‘‘আমাদের বিক্রমপুরআমাদের খবর

আমাদের সাথেই থাকুনবিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com

আমাদের পেইজ লাইক দিন শেয়ার করুন।       

জাস্ট এখানে ক্লিক করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন