বিক্রমপুরের কৃতি সন্তান অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবু ইউসুফ ফকির স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক

0
326
বিক্রমপুরের কৃতি সন্তান অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবু ইউসুফ ফকির স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক

প্রকাশিত: রবিবার,২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ইং ||১৪ পৌষ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ।

বিক্রমপুর খবর:অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবু ইউসুফ ফকির স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক,কান, গলা বিভাগীয় প্রধান এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ এর শিক্ষক সমিতির সভাপতি, এক্সিকিউটিভ মেম্বার (EC)বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ)কেন্দ্রীয় কমিটি, কোষাধ্যক্ষ,স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ(স্বাচিপ), অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের স্বাস্থ্য বিষয়ক  সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু পরিষদ লৌহজং উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক, মুন্সীগঞ্জ জেলা মানবাধিকার কমিটির সভাপতি।

অধ্যাপক ডা: মো: আবু ইউসুফ ফকির এক কথায় ভাল মানুষ। তিনি তার পেশায় যেমন খ্যাতি অর্জন করেছেন তেমননি খ্যাতি নিজ এলাকায়। সফল সমাজকর্মী হিসেবে নিজকে পরিচিত করতে পেরেছেন । ডা. ইউসুফ ফকির নিজের দায়িত্বের অবহেলা কী জিনিস তা তিনি জানেন না। বরং নিজ বিভাগ “নাক-কান-গলা”ছাড়া অন্য কোনো রোগী তার কাছে গেলে সাধ্যমতো অন্য ডাক্তারের কাছে যাবার সুব্যবস্থা করে দেন। এজন্য নিজ এলাকাসহ বিভিন্ন পেশার লোকের কাছে তিনি এখন “ইউসুফ স্যার”থেকে “ইউসুফ ভাই”হয়েছেন।

বিক্রমপুরের কৃতি সন্তান এই ক্ষনজন্মা সফল চিকিৎসক ১৯৬৩ সালে জম্ম গ্রহন করেন লৌহজং উপজেলার গোড়াকান্দা গ্রামে ।

১৩তম বিসিএসের মাধ্যমে ১৯৯৪ সালে সরকারি চাকুরীতে যোগদান করেন,তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নাক,কান ও গলা বিভাগে অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত আছেন। শিক্ষাজীবনে তিনি বিএসএমএমইউ থেকে ২০০৭ সালে সম্পূর্ন করেছেন এমএস (ই এন টি) ডিগ্রী। ১৯৭৯ সালে কমলা এল কে হাই স্কুল থেকে ঢাকা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ও নটরডেম কলেজ থেকে ১৯৮১ সালে প্রথম বিভাগে এইচএসসি পাশ করেন। এছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৮১ সালে এমবিবিএস,আইপিজিএমআর থেকে ডিএলও ডিগ্রী অর্জন করেন যথাক্রমে ১৯৮৮ ও ১৯৯৫ সালে।

অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম খানের হাত ধরেই মোঃ আবু ইউসুফ ফকিরের রাজনীতিতে পথ চলা শুরু। রাজনৈতিক গুরু হিসেবে অধ্যাপক ডা: মো: আবু ইউসুফ ফকির  প্রয়াত অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম খান কে স্বীকার করেন এবং গর্ব করে তা বলেন।

ছাত্র রাজনীতিতে তার অবদান অবিস্মরনীয়। ১৯৮৪ সাল থেকে-ই তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ শাখার সহ-সাধারন সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার দক্ষতা,মেধা আর একনিষ্ঠতায় তিনি সফল হয়েছে রাজনীতিতে।  একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৫ সালে দায়িত্ব পালন করেন সহ-সভাপতি পদে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে তিনি বৃহৎকারে রাজনৈতিক পরিমন্ডলে প্রবেশ করেন ১৯৮৯ সালে। জনগনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে প্রথম পন্থা রাজনীতি। কিন্ত দেশের রাজনীতি নিয়ে জনগনের মধ্যে বৈরী মনোভাব থাকলেও নিজ গুণ ও দক্ষ নেতৃত্বে তিনি সফল হয়েছে রাজনৈতিক পরিমন্ডলেও। যোগদান করে আওয়ামীলীগে। তার একনিষ্ঠতা স্বাধীনতার স্বপক্ষের রাজনৈতিক এই শক্তিকে জনগনের আরো কাছে নিয়ে গেছে। জনগনের ইচ্ছায় সঙ্গে নিজের ইচ্ছাকে সম্পৃক্ত করে তিনি তৈরি করেছেন রাজনৈতিক পরিমন্ডল। সেখানেও তিনি সফল। নিজ গ্রামের মানুষের দুঃখ কষ্টের অংশীদার হয়ে তিনি এখন ছুটে যান সময়ে অসময়ে। ১৯৮৯ সালে মুন্সীগঞ্জের কমলা ইউনিয়ন শাখা, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে লৌহজং উপজেলা শাখার (হামিদ ফকির-মতিন পরিষদ) আওয়ামীলীগের সদস্য হোন। ১৯৯১ সালে মহিউদ্দিন-ঢালী মোয়াজ্জেম পরিষদের মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখা শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ২০০২ সালে  কেন্দ্রীয় বিএমএ (ডা: রুহুল হক-ডা: কামরুল হাসান) পরিষদে বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক পদে নির্বাচন করেন। ২০০৫ সালে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচন করেন কেন্দ্রীয় বিএমএ (ডা: রশিদ-ই-মাহাবুব- ডা: ইকবাল আসলান) পরিষদে। তিনি যে বিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া করে এসএসসি পাশ করেন সেই বিদ্যালয়ের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন। পর পর তিন বার তিনি তার নিজ স্কুল কমলা এল কে হাই স্কুলে সভাপতি দায়িত্বে ছিলেন। দায়িত্ব পালন করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক হিসাবে। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (ডা: রুহুল হক- ডা: জালাল) পরিষদে। এছাড়া স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (ডা: রুহুমল হক- ডা: ইকবাল পরিষদ) সমাজ কল্যাণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

তার রাজনৈতি এই দক্ষতাকে অনেকটা জোর করে কারাবন্ধি করে রাখা হয়েছিল বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে। সেসময় চার দলীয় জোট সরকারের রোষানলে তাকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করা হয়। ২০০৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ভাংচুরের ঘটনায় চার দলীয় জোট  সরকার তাকে সাতটি মিথ্যা মামলার আসামী করেন। যা পরবর্তীতে আদলতের মাধ্যমে নির্দোষ প্রমাণিত হয়।

নিজ জেলার প্রতি তার ভালবাসা এখন আশে পাশের মানুষ হর হামেশাই স্মরন করে। ডাক্তার হিসাবে তার যে দায়িত্ব তা পালনে তিনি কখনও কৃপণতা করেননি। অদ্যবধি তিনি সেবার হাত প্রশস্ত রেখেছেন। মুন্সিগঞ্জ-বিক্রমপুর জেলা সমিতির নির্বাচিত কার্যকারী সদস্য হিসাবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (ডা: ইকবাল-ডা: আজিজ পরিষদের) বর্তমান কমিটি ২০১৭ কোষাধ্যক্ষ দায়িত্বে আছেন। সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ, শিক্ষক সমিতি। ২০১১ সাল থেকে অদ্যবধি তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারন সম্পাদক পদে দায়িত্বে আছেন। পর পর দুই বার কার্যকরী সদস্য পদে দায়িত্ব পালন করছেন বিএমএ-তে। সোসাইটি অব ওটোল্যাংরিগোলজি বাংলাদেশে সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়াল এন্ড সার্জন্স (বিসিপিএস), ইএনটি ফ্যাকালটির সদস্য সচিব হিসাবে তিনি তার যোগ্যতা প্রমাণ প্রদর্শন করছেন।

অধ্যাপক ডা: মো: আবু ইউসুফ ফকির বলেন,আমার জীবনে কিছু চাওয়ার নেই। আমি যতটুকু পেয়েছি সেটুকুতেই সন্তোষ্ট। আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি মানুষের উপকার করতে। কতটুকু পেরেছি তা যারা আমার থেকে উপকার পেয়েছে তারাই ভাল বলতে পারবে। আমি একজন ডাক্তার হিসাবে কখনও আমার নিজ জেলার মানুষকে অবহেলিত হতে দেয়নি। যখন-ই যে এসেছে তাকেই আমার সাধ্যমতো সর্বোত্তম সেবা দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। এমনও অনেক রোগী এসেছে যাদের নূন্যতম ঔষুধ কেনার সামথ্য নেই। ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালিয়ে নেয়ার মতো আর্থিক স্বচ্ছলতা নেই। সেসব রোগীদের তাদের যতদিন পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসায় রাখার প্রয়োজন হয়েছে ততদিন তাদের সেবা করেছি। আমার দ্বারা কারো চিকিৎসা করার সুযোগ না থাকলে আমি তাদের সংশ্লিস্ট চিকিৎসকের কাছে পাঠিয়েছি।

কর্ম  এবং নেতৃত্ব দিয়ে এমন একজন মানুষ এখনও দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন, যা মানুষকে উদ্বূদ্ধ করে আর উৎসাহ দেয় পরোপকারে। নতুন দায়িত্ব তাঁকে আরো সাফল্য এনে দেবে এ প্রত্যাশা করে এলাকাবাসি।

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন