‘বদিভাই’খ্যাত জীবন শঙ্কায় অভিনেতা কাদের, ‘কেমো দেয়ার অবস্থায় নেই’

0
30
‘বদিভাই’খ্যাত জীবন শঙ্কায় অভিনেতা কাদের, ‘কেমো দেয়ার অবস্থায় নেই’

প্রকাশিত:সোমবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২০ইং ।। ৬ইপৌষ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)।। ৫ই জমাদিউল-আউয়াল,১৪৪২ হিজরী।

বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : ‘বদিভাই’খ্যাত জনপ্রিয় অভিনেতা আবদুল কাদেরের জীবন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তার শারীরিক অবস্থা ‘আশঙ্কাজনক’। শরীর এতটাই দুর্বল যে, কেমোথেরাপি নেয়ার মতো অবস্থায় নেই কাদের। এ কারণে তাকে চেন্নাই থেকে দেশে ফেরত আনা হয়েছে।

১৫ ডিসেম্বর এ অভিনেতার ক্যান্সার ধরা পড়ে। চেন্নাইয়ের চিকিৎসকদের কাছ থেকে এই খবর পেয়ে কাদেরের পরিবার তার চিকিৎসার ভার মেডিকেল টিমের ওপর ছেড়ে দেয়। চেন্নাইয়ের ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেমো দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কাদেরের শারীরিক অবস্থা দুর্বল হওয়ায় তাকে কেমো দেয়া সম্ভব হয়নি। পরে রাতেই এ অভিনেতার পরিবারকে জানিয়ে দেন, এই অভিনেতার শারীরিক অবস্থা নাজুক, কেমো দেয়া যাবে না।

এ কারণে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। রোববার দুপুর দেড়টার দিকে দেশে ফেরার পর তার পরিবার তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করে।

আবদুল কাদেরের পুত্রবধূ জাহিদা ইসলাম জেনি দেশে ফেরার পর জানান, তার শ্বশুরের শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তার রক্তের হিমোগ্লোবিন ক্রমশ কমছে। কেমোথেরাপি দেয়ার কথা ছিল চেন্নাইয়ে। চিকিৎসকরা সব দিক বিবেচনা করে জানালেন, তার এ অবস্থায় কেমোথেরাপি দেয়া সম্ভব নয়। এই থেরাপি সহ্য করার মতো যে শারীরিক শক্তি দরকার, তা তিনি সহ্য করতে পারবেন না।

জেনি চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে আরও জানান, বাবার শরীরে শক্তি কম। শেষ পর্যন্ত তাকে কেমো দেয়া হচ্ছে না। তিনি এখন কিছুই খেতে পারছেন না। কিছু খেলেই তার বমি হয়। তাকে এখনও স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। গতকাল থেকে তার রক্তের হিমোগ্লোবিন ৩ থেকে ৫–এর মধ্যে ওঠানামা করছে।

বেশ কিছুদিন ধরে আবদুল কাদের অসুস্থ ছিলেন। ঠিকমতো খেতে পারছিলেন না। একাধিকবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেও তার কোনো রোগ ধরা পড়ছিল না। পরে সর্বশেষ পুরো শরীর সিটিস্ক্যান করে জানা যায়, এই অভিনেতার টিউমার হয়েছে। টিউমার ধরা পড়ার পর পারিবারিক সিদ্ধান্তে ৮ ডিসেম্বর তাকে চেন্নাইয়ের ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এই হাসপাতালে আবারও পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হলে ১৫ ডিসেম্বর ডাক্তাররা বোর্ড মিটিং করে এই অভিনেতার পরিবারকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার খবর দেন।

১৯৫১ সালে বিক্রমপুরে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামে অভিনেতা আবদুল কাদেরের জন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর শেষ করার পর তিনি সিঙ্গাইর কলেজ ও লৌহজং কলেজে অধ্যাপনায় নিযুক্ত হন। পরে জুতা তৈরিকারক প্রতিষ্ঠান বাটায় যোগ দেন ১৯৭৯ সালে; সেখানে ছিলেন ৩৫ বছর।

তার অভিনীত মঞ্চনাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে– ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘এখনও ক্রীতদাস’, ‘তোমরাই, স্পর্ধা’, ‘দুই বোন’, ‘মেরাজ ফকিরের মা’।

টিভিতে তিনি তিন হাজারের মতো নাটকে অভিনয় করেছেন। বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র নিয়মিত শিল্পী তিনি।

প্রয়াত কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের বহু জনপ্রিয় নাটকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেন কাদের। তিনি হুমায়ূনের ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে বদিভাই চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান।

২০০৪ সালে আবদুল কাদের অভিনয় করেন ‘রং নাম্বার’ চলচ্চিত্রে।

দীর্ঘ অভিনয় জীবনের স্বীকৃতি হিসেবে টেনাশিনাস পদক, মহানগরী সাংস্কৃতিক ফোরাম পদক, অগ্রগামী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী পদক, জাদুকর পিসি সরকার পদক, টেলিভিশন দর্শক ফোরাম অ্যাওয়ার্ড, মহানগরী অ্যাওয়ার্ডসহ বেশ কিছু পদকও পেয়েছেন আবদুল কাদের।

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..               

‘‘আমাদের বিক্রমপুরআমাদের খবর

আমাদের সাথেই থাকুনবিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন