প্রকাশিত:মঙ্গলবার,১ অক্টোবর ২০১৯ ইং ।। ১৬ই আশ্বিন ১৪২৬ বঙ্গাব্দ।
বিক্রমপুর খবর :অনলাইন ডেস্ক :ফারাক্কার ব্রিজের ১০৯টি স্লুইস গেট বাংলাদেশের দিকে খুলে দিয়েছে ভারত। দেশটির উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে রেকর্ড বৃষ্টিতে উপচে পড়ছে বাঁধের পানি- এই অযুহাতে ফারাক্কা বাঁধের সব কয়টি লকগেট এক সঙ্গে খুলে দেয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ এই গেটগুলো খুলে দিয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জি নিউজ এখবর দিয়েছে। খবরে বলা হচ্ছে, দেশটির উত্তর প্রদেশ ও বিহারে গত কয়েক দিনে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। এতে উপচে পড়ছে পানি। এ কারণেই ফারাক্কা বাঁধের সব গেট একসঙ্গে খুলে দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এর জেরে মুর্শিদাবাদের একাংশ ও বাংলাদেশে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, গত কয়েক দিনে গঙ্গা ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার প্রায় সব নদনদীতে পানি বাড়ছে। একটানা বর্ষণে ইংরেজ বাজার শহরের একাধিক এলাকা তলিয়ে গেছে। সোমবার ফারাক্কা ব্যারাজের ১০৯টি গেটই খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর জেরে নদীর নিম্নগতিতে প্লাবনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। পানি বেড়েছে মালদা জেলার ফুলহর, মহানন্দা ও কালিন্দী নদীতে।
ইংরেজ বাজারের ২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২১টিই প্লাবিত হয়েছে। পুরনো মালদার ২০টি ওয়ার্ডের ৯টি জলমগ্ন। জেলায় একাধিক জায়গায় নদী তীরবর্তী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা।
এদিকে বিহার ও উত্তরপ্রদেশে সৃষ্ট বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৩৪ জন মারা গেছে। মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে জানা গেছে। গেট খুলে দেয়ার কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হওয়ায় মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
শুষ্ক মৌসুমে ফারাক্কা পয়েন্টে পানি না থাকায় বাংলাদেশের পদ্মা নদীতে পানির প্রবাহ বাড়ে না। ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশের নদ-নদীগুলো। পদ্মার বুকে চরের পর চর পড়ে চলেছে। গত অর্ধশতাব্দীতে বাংলাদেশের অন্তত ৬শ’ নদ-নদী প্রকৃতি থেকে হারিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের ফলে শুকনো মৌসুমে উত্তরাঞ্চলের নদীগুলো অনেকটা মরুভূমিতে পরিণত হয়। আবার ভারত বর্ষা মৌসুমে নিজেদের রক্ষা করতে ফারাক্কার সব গেট খুলে দিলে ফুঁসে তোলে বাংলাদেশের নদীগুলো। হঠাৎ করে পানি বেড়ে ভাসিয়ে নিয়ে যায় বাংলাদেশের মানুষের বাড়িঘর, ফসলসহ সবকিছু।