প্রকাশিত: সোমবার, ২২মার্চ ২০২১ইং।। ৮ই চৈত্র ১৪২৭ বঙ্গাব্দ (বসন্তকাল)।। ৮ শা’বান ১৪৪২হিজরী
বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক:সেন্টমার্টিন। ভ্রমণপিপাসুদের কাছে প্রিয় একটি স্থান। সুযোগ পেলেই ভ্রমণপিপাসু মানুষজন এই স্থানটিতে ঘুরে আসতে চায়। তবে সেন্টমার্টিনে যাওয়ার একমাত্র উপায় নৌপথ।
চলুন জেনে নিই সেন্টমার্টিনে যাওয়ার নৌপথের কিছু তথ্য:-
১. টেকনাফ থেকে সাধারণত প্রতিদিন ২টি ট্রলার সেন্টমার্টিন যায়। সময় সকাল ৯টা ও ১০টা। কিন্তু এগুলো কোনো সময় মানেনা। ট্রলার লোড হয়ে গেলে আগেভাগেই ছেড়ে দেয়। আমার ট্রলার ছিলো ১০ টায়, ছেড়েছিল আনুমানিক ৯.৩০ মিনিটে। আবার প্রথম ট্রলার ৯টায় ছাড়বে বললেও ওইটাও ১০টার ট্রলারের আগে-পরেই ছাড়ে।
২. ট্রলারের সার্ভিস একদম যাচ্ছেতাই। যে যেভাবে পারছে উঠছে। প্রচুর মাল দিয়ে পেট লোড করবে। আর এর উপর মানুষ। যাত্রীর চাপ বেশি হলে আপনাকেও মালের মত লোড হয়ে যেতে হতে পারে। ভাড়া ২২০ টাকা।
৩। ট্রলারে যাবার নিয়ত থাকলে বাসা থেকে ছাতা অবশ্যই নিয়ে আসবেন। কারণ সমুদ্রের উপরে রোদের তাপ একদম খাড়াভাবে লাগে। ইঞ্জিনের সাউন্ডটা অনেক। চেষ্টা করবেন ইঞ্জিন থেকে দূরে বসতে। আপনার যদি মোশন-সিকনেস থাকে তাহলে ট্রলারে না যাওয়াই ভালো, বমি করে দিতে পারেন। রোদের তাপ, ইঞ্জিনের শব্দ; এসব সহ্য করার শক্তি না থাকলে মাথা ঘুরতে শুরু করবে আপনার। তবে ট্রলার সমুদ্রে পা দেয়ার পর বাতাস পাবেন। সাধারণত আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন পৌঁছাতে।
৫। ট্রলারে কারা যাবেন: একা, সাথে ২-৩ জন বন্ধু, সাহসী মহিলাও সাথে নিতে পারেন। বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে ট্রলারে না যাওয়াই ভালো। সময় কম লাগে, টাকা সেইভ ছাড়াও একটু বাড়তি উত্তেজনার জন্যও ট্রলারে যেতে পারেন। তবে চেষ্টা করবেন যে ট্রলারটায় লোকাল লোকজন বেশি সেটায় উঠতে। কারণ সমুদ্রে ঢেউ দেখে আপনি ভয় পেতে পারেন। কিন্তু আসলেই কি সেটা ভয় পাওয়ার যোগ্য কিনা সেটা লোকালদের এক্সপ্রেশন দেখে বুঝতে পারবেন। আর যদি এমন ট্রলারে উঠেন যেটায় সবাই ভ্রমণের জন্য ফাস্ট/সেকেন্ড টাইম সেন্টমার্টিন যাচ্ছে তাহলে মাঝসমুদ্রে গিয়ে বাচাও, উঠাও, মইরা গেলামগো, মাফ কইরা দেওগো টাইপ কান্নাকাটি, চিল্লাচিল্লি শুনতে পাবেন।
৬। সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ ফিরার ট্রলার ছাড়ে সকাল ৮টা ও ৯টায়। এছাড়া এখন কর্ণফুলী শিপ পাবেন কক্স-সেন্টমার্টিন, সেন্টমার্টিন-কক্স আসা-যাওয়া করে। ভাড়া ওয়ান ওয়ে ১০০০ টাকা। সেন্টমার্টিন থেকে বিকাল ৩টায় ছাড়বে বললেও ৪টা করে ফেলে। সময় লাগে কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা। ভাড়া ১০০০ হলেও আপনি টিকেটটি সেন্টমার্টিনের লোকাল লোকের মাধ্যমে নেন তখন ৫০০-৬০০ টাকায় ম্যানেজ করতে পারবেন। কারণ কর্ণফুলীতে লোকালদের জন্য ভাড়া ৫০০ টাকা। সেক্ষেত্রে শিপের স্নাক্সটা পাবেন না। এই হলো সেন্টমার্টিন ভ্রমণে ট্রলার/শিপের ওভারভিউ।
সেন্টমার্টিন খুবই ছোটো দ্বীপ, দিনকে দিন আরো ছোটো হচ্ছে। ডাব খেয়ে খোসাটা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলুন। চিপস, পানির বোতল এখানে সেখানে ফেলে নোংরা করবেন না। চেষ্টা করবেন অফ সিজনে সেখানে যেতে। তাহলে একচুয়াল সেন্টমার্টিনের ফিলটা পাবেন। আমার সাথে থাকা লোকাল ছেলেকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, মানুষ এত কম কেনো, ওর ভাষায়; অন সিজনে সেখানে পা ফেলার জায়গা পাবেন না, এত ভিড় থাকে। ছেড়াদ্বীপে যাওয়ার সময় ভুলেও সাইকেল নিবেন না, শেষে সাইকেল আপনাকে বয়ে বেড়ানো বদলে আপনাকেই সাইকেলকে বয়ে বেড়াতে হবে। যেখানেই যাবেন, লোকালদের সাথে প্রচুর কথা বলবেন/ আড্ডা দিবেন; তাহলে অনেক কিছু জানতে/দেখতে পারবেন যা পূর্বে কেউ দেখেনি।
কার্টেসি: ইমরান বাঁধন
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..