জীবনের মুখগুলি ৫৪

0
19
জীবনের মুখগুলি ৫৪

ঝর্না রহমান

লেখক- কামরুল হাসান  (Kamrul Hassan)

প্রকাশিত : রবিবার, ৯ই আগস্ট ২০২০ইং ।। ২৫শে শ্রাবণ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ ।। বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক :

সেই যে গান আছে না ‘আমি তাকে চোখে দেখিনি, তার অনেক গল্প শুনেছি’ ঝর্না রহমানের বেলা আমার তাই হয়েছিল। তার লেখা পড়েছি, নাম শুনেছি বহুবার, শুনেছি তার গুণের কথা, কিন্তু কখনো চোখে দেখিনি। চোখে দেখলাম সার্ক সাহিত্য উৎসবে যাবার প্রাক্কালে নিকেতনে প্রবেশের মুখটায় শ্যুটিং ক্লাবের বিপরীতে গুলশান ১ এর যে পার্ক সেই পার্ক সংলগ্ন ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ইন্ডিয়ান বিমানের টিকেট বিক্রি হয় এমন একটি ট্রাভেল এজেন্সির অফিসে। সেটা ২০১২ সাল। তার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন পাপড়ি রহমান। দেখলাম কবিতার মতো সুচারু আর কথাসাহিত্যের মতো সুনন্দ এক মানবী, আলতো হেলান দিয়ে বসে আছেন পদ্যের প্রপাত আর গদ্যের ঋজুতা নিয়ে। জানতাম কথাসাহিত্য ও কবিতা- দুটোতেই তিনি স্বচ্ছন্দ।

আমরা শ্যামলীর লাল বাসে চড়ে গেলাম বর্ডারে। আমরা বলতে ঝর্না রহমান, পাপড়ি রহমান, ও আমি। লাল বাস সারারাত আরিচা, মাগুড়া, যশোহর পাড়ি দিয়ে অতিভোরে বেনাপোল পৌঁছাল। সেখানে বিবিধ চক্কর, হরেক প্রকার খাওয়াদাওয়া, বিশেষ করে বনগাঁ পৌঁছে প্রাতরাশ, ফের এক বাসে চড়ে কলকাতা পৌঁছাতে পৌঁছাতে আমরা বন্ধু হয়ে গেলাম। চমৎকার প্রাণবন্ত মানুষ তিনি, বন্ধু না হয়ে উপায় নেই।
সে বছর সার্ক সাহিত্য উৎসব হয়েছিল উত্তর প্রদেশের রাজধানী লক্ষ্মৌ শহরে। নবাবদের ঐতিহ্যবাহী বড়ো ইমামবাড়া, ছোটো ইমামবাড়া, রুমি দরোওয়াজা খচিত লক্ষ্মৌ শহরে সেই প্রথম যাওয়া আমাদের। সেসময়ে চার লাইনের কবিতা (চতুর্পদী) লেখার এক ঝোঁক চেপেছিল আমার, নবাবদের দালানকোঠার রূপ দেখে আর ইতিহাস শুনে সে ঝোঁক বেড়ে যায়। মোবাইলে লিখে তা পাঠাতাম ঝর্না রহমানকে। তাকে পাঠাবার কারণ তিনি কবিতার উত্তর দিতেন কবিতায়, চতুর্পদীর উত্তর চতুর্পদীতে। আমাদের এই কবিতাপত্র চালাচালি চলতে লাগল লক্ষ্মৌ ছাড়িয়ে কলকাতা, কলকাতা ছাড়িয়ে ঢাকায়। এতটাই যে পরের বছর বইমেলায় আমাদের যৌথ কাব্য ‘সৌধের পৃথক দরজায় প্রকাশিত হলো। বইটির অর্ধেক জুড়ে আমার লেখা চতুর্পদী, অন্য অর্ধেক জুড়ে ঝর্না রহমানের লেখা চতুর্পদী। একপাশে ‘খিলানের নিচে আলো’, ১৮০ ডিগ্রি উল্টে নিলে ওপাশে ‘ঝরে পড়ে গোলাপী গজল’। তিনটি নামেই ঐতিহ্যবাহী লক্ষ্মৌ উপস্থিত।
মাধ্যমিক পেরুনোর আগেই তার বিয়ে হয়ে যায়। সে আমলে প্রখরাবতীদের নিয়তি ছিল এই। ভালো চাকুরে বা প্রতিষ্ঠিত ছেলে পেলে কন্যার পিতা বিবাহ প্রস্তাব ফেরাতেন না। তখন সকল পিতাই নিজেদের কন্যাদায়গ্রস্ত মনে করতেন। এমন পরিস্থিতিতে কী হয়? কন্যা ঘরকন্নার কাজে লেগে যায়, পড়াশোনার পাট শেষ। কোল জুড়ে শিশু আসে, স্কুল হয়ে ওঠে দূরের কোনো গৃহ। ঝর্না রহমানের কোল জুড়েও শিশু এসেছিল, কিন্তু তিনি পড়াশোনা ছাড়েননি। বিক্রমপুরের কন্যা বিবাহসূত্রে মানিকগঞ্জে এসে ঘরকন্না যেমন করেছেন, তেমনি বিদ্যার পাঠও নিয়েছেন। লক্ষ্মী হয়েও সরস্বতীকে ভোলেননি। একে একে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, বি এ পাশ করে ভর্তি হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করলেন অদম্য মনোবলে। তার সহপাঠীদের মাঝে অনেকেই এখন প্রথিতযশা লেখক। এই তালিকায় আছেন মঈনুস সুলতান, আকিমুন রহমান, তুষার দাশ, মোহন রায়হান প্রমুখ। আশ্চর্য যে মানিকগঞ্জ থেকে আসা ঝর্না রহমানের রেজাল্ট ছিল সবার চেয়ে সেরা।
সাহিত্যাঙ্গণে তার প্রবেশ কথাসাহিত্যিক হিসেবে। প্রথমদিকে শুধুই ছোটোগল্প লিখতেন। প্রবাদপ্রতিম সম্পাদক কবি আহসান হাবীব সম্পাদিত ‘দৈনিক বাংলা সাহিত্য সাময়িকীতে অনেকগুলো ছোটগল্প প্রকাশিত হলে লেখক ও পাঠকমহলে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সেসময়ে এত ভুরিভুরি দৈনিক ছিল না, প্রকাশের উঠোনটি ছিল ছোটো, লেখা প্রকাশ হতো লেখার যোগ্যতায়। বিশেষ করে আহসান হাবীবের হাত দিয়ে লেখা প্রকাশ ছিল নবীন লেখকদের স্বপ্ন। প্রথমদিককার ওই প্রকাশ, অনুমান করি, তার আত্মবিশ্বাস বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল, তিনি অন্তঃস্থ শক্তি সম্পর্কে নিঃসন্দেহ হয়েছিলেন, এবং লেখালেখিকে প্রধান প্রেষণা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।
প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘কালঠুঁটি চিল’ প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালে। পাঁচটি উপন্যাস, যার ভেতরে দুটি কিশোর উপন্যাস, এবং আটটি কাব্যসহ তার গল্পগ্রন্থ কুড়িটি। প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনী, নাটক, শিশুসাহিত্য ও সম্পাদনা মিলে তার গ্রন্থসংখ্যা অর্ধশতাধিক। এই বিপুল গ্রন্থসংখ্যা বলে দেয় তিনি নিরবিচ্ছিন্নভাবে লেখালেখি করেছেন; গ্রন্থসমূহের প্রকৃতি বলে দেয় তিনি কেবল বহুলপ্রজ নন, বহুমাত্রিক। সাহিত্যে বহুমাত্রিকতার পথ রবীন্দ্রনাথ, নজরুল দেখিয়ে গেছেন, এটা আমাদের নিজস্ব ভূগোলের লেখকদের একটি বৈশিষ্ট্য, অনেকটা কর্পোরেট হাউসগুলোর unrelated diversification এর মতো। এর শক্তি বা দুর্বলতা কী কী তা না জানা গেলেও এটা জানা যায় বহুমাত্রিক লেখালেখি কঠিন, তা লেখকের শক্তিমত্তার পরিচায়কও বটে।
একদিকে সংসার সামলাচ্ছেন, অন্যদিকে কলেজে পড়াচ্ছেন, উপরন্তু লিখে চলেছেন অবিরল ধারায় গল্প, কবিতা, নাটক, ছড়া, প্রবন্ধ, উপন্যাস। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি সংগঠিত করছেন কথাসাহিত্যের আসর ‘পরণকথা’। সামাজিকতায় যেমনি নিখুঁত, সাহিত্যের অনুষ্ঠানে তেমনি ঘড়ি ধরে উপস্থিতি। তার কাজের পরিমাণ দেখলে বিস্মিত হতে হয়। এ জন্যই আমরা যারা ঘনিষ্ঠভাবে চিনি তারা তাকে ‘দশভুজা’ বলি। দুর্গার মতোই যেন দশটি হাত তার। সৌজন্যবোধে নিঁখুত, আপ্যায়নে অক্লান্ত, ও পরিশীলিত রুচির ঝর্না রহমান সকলের প্রিয় ব্যক্তিত্ব। ঠোঁটে স্বাতন্ত্র্যচিহ্নবাহী একটি মিষ্টি হাসি লেগে থাকে সর্বদাই। কাঁঠালবাগানে তার বাসায় পরণকথার আসর উপলক্ষ্যে কত যে খাদ্য, কত যে বিবিধ ব্যঞ্জন আহার করেছি তার ইয়ত্তা নেই।
মনে আছে আমরা যখন কলকাতার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিলাম, তখন ঝর্না রহমান গান ধরলেন, ‘কবে আমি বাহির হলেম, সে তো আজকে নয়, সে আজকে নয়’। সেই গান কানে ও ঠোঁটে লেগে রইল কেবল লক্ষ্মৌর আকাশযাত্রায় নয়, আরো বহুদিন। খুুব চিকন তার গলা, ট্রেবলের কাছে ঝনঝন করে কাঁপে। শুনে মনে হলো এ তো সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বোন, কোনো সৌখিন শিল্পী নয়। অনুমান সত্যি তিনি বেতার ও টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী। তার গানের অনেকগুলো সিডি রয়েছে। সার্ক সাহিত্য উৎসবের এক অবিচ্ছেদ্য অন্তর্ভুক্তি ঝর্না রহমানের গান। এজন্য অবিচ্ছেদ্য বল্লাম সার্ক সাহিত্য উৎসবে তিনি নিয়মিত যোগ দেন। উৎসব অধিপতি প্রখ্যাত পাঞ্জাবী কথাসাহিত্যিক অজিত কউরের অত্যন্ত প্রিয় মানুষ ঝর্না রহমান, তিনি যোগ না দিলে উৎসব যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এই সার্ক সাহিত্য উৎসবের কল্যাণে, অনুমান করি, সার্ক অঞ্চলের কবি সাহিত্যিকদের মাঝে ঝর্না রহমান প্রবলভাবে পরিচিত।
আমি যতবার সার্ক সাহিত্য সম্মেলনে গিয়েছি, ততবার তার দেখা পেয়েছি, পেয়েছি অমলিন সান্নিধ্য, অবলোকন করেছি তার ব্যক্তিত্বের সাথে সৌন্দর্যের স্নিগ্ধ অবস্থান। ঝর্না রহমানকে মনে হয় রবীন্দ্র সাহিত্যের নায়িকা, এমন মাধুরীময় উচ্চশিক্ষিত নারী যার অন্যতম পরিচয় লেখালেখি ও গান গাওয়া, পরিচ্ছেদে পুরো বাঙালিয়ানা মানুষটিকে তাই মনে হওয়া স্বাভাবিক। আগ্রায় প্রতিভোরে হোটেল থেকে রিকশায় চড়ে আমি তাজমহল দেখতে যেতাম, চাইতাম ঝর্না রহমান সঙ্গে থাকুক। আগ্রা থেকে আমি গিয়েছিলাম ফতেপুর সিক্রি দেখতে, সঙ্গে ছিলেন মুহম্মদ নূরুল হুদা, ঝর্না রহমান ও পাপড়ি রহমান। একই দল, কেবল পাপড়ি রহমানের স্থলে মার্জিয়া লিপি, দিল্লি ফিরে গেলাম রাজস্থান দেখতে। প্রথমে আজমীর, তারপর জয়পুর। পরে জয়পুর থেকে দিল্লি হয়ে কলকাতা আসার বিমানে দেখি বাকিরা কেউ নেই, রয়ে গেছি কেবল আমরা দুজন।
নিজের গড়া সংগঠন পরণকথাকে ঘিরে তিনি জড়ো করেছেন একদল কথাসাহিত্যিককে, যাদের সংখ্যাগুরু দলটি নারী। তাদের কাছে তিনি কেন্দ্র, তিনি শাখাপ্রশাখা মেলা ছায়া। আনোয়ারা সৈয়দ হকের গড়া ‘অশ্রুপাত’, অধ্যাপক নিয়াজ জামানের গড়া ‘গাঁথা’,
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী মোহন রায়হানের গড়া ‘কবিতাপত্র দিকচিহ্ন’ সহ জড়িয়ে আছেন অসংখ্য সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে। ‘অশ্রুপাতের’ আসর বসেছিল মোট ১০০ টি, সৈয়দ শামসুল হক যখন পরলোকে পাড়ি দেন তখন সম্পন্ন হয়েছিল ৯৮টি; আরো দুটি আসর শেষে এর যবনিকা টানেন আনোয়ারা সৈয়দ হক। এই ১০০ আসরেই যুক্ত ছিলেন ঝর্না রহমান। ‘গাঁথা’র সাথে যুক্ত ছিলেন টানা দশ বছর। এইসব দৃষ্টান্ত প্রমাণ করে তিনি সংগঠনপ্রিয়, যা সাহিত্য প্রেম থেকেই উৎসারিত। বিক্রমপুরের মেয়ে হিসেবে যুক্ত আছেন ‘অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের’ সাথে। এর মাসিক পত্রিকাটি তিনি সম্পাদনা করেন। একবার তাদের সাথে গেলাম বিক্রমপুরে লৌহজং থানার কনকসার গ্রামে কমরেড নূহ-উল-আলম লেনিনের বাড়িতে। মনোমুগ্ধকর সে যাত্রা থেকে ফিরে এসে লিখলাম ‘অগ্রসর বিক্রমপুর যাত্রা’ সিরিজ।
লেখালেখি ও গান করা ছাড়াও ঝর্না রহমান দারুণ ছবি আঁকেন। একটি মানুষের ভেতর এত গুণ কী করে সন্নিবেশিত হয়- ভাবলে অবাক লাগে। হতে পারে সাধনা, হতে পারে ঈশ্বরপ্রদত্ত; তবে ঝর্না রহমান আমাদের বিস্মিত করে চলেছেন। এই করোনাকরুণদিনেও তিনি বসে নেই। নাতি নাতনিদের নিয়ে ঘরোয়া ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে ছড়া লেখার কর্মশালা, সেসব ছড়া ও ছবি দিয়ে দেয়ালপত্রিকা প্রকাশ- তার কর্মতৎপরতা চলমান। মা হিসেবে যেমন তিনি রত্নগর্ভা (তার তিন পুত্রই বুয়েটের স্নাতক, দুজন প্রকৌশলী, একজন স্থপতি), দাদী হিসেবেও তিনি অনন্যসাধারণ। শিশুদের সুকুমারবৃত্তি বিকাশ ও মানস গঠনে পরিবারগুলোর কী করা উচিত তাই যেন তিনি করে দেখাচ্ছেন। পহেলা বৈশাখ থেকে শুরু করে পহেলা ফাল্গুন, পহেলা আষাঢ়, ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যের সাথে, রবীন্দ্র নজরুল জয়ন্তী, বাঙালিয়ানার ষোল আনা তার কর্মকাণ্ডে।
সুদীর্ঘ ৩০ বছর পিলখানার বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুর রউফ কলেজে পড়িয়ে সম্প্রতি তিনি অবসরে গেলেন। ভাবছি তার সেই প্রথম শিক্ষকতা জীবনের ছাত্ররাও কত বড়ো, জীবনের কত উঁচু ধাপে তারা আজ প্রতিষ্ঠিত। তাদের তিনি কেবল পাঠ্যপুস্তকের বিষয় পড়াননি, সঙ্গে পড়িয়েছেন মূল্যবোধ, দেশপ্রেম ও ভালো মানুষ হবার প্রয়োজনীয়তা। ওই কলেজের যাবতীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও দিবস পালনের মূল পরিকল্পক ছিলেন তিনি। ছাত্রদের গানের রিহার্সাল থেকে শুরু করে, গীতিনকশা রচনা, মঞ্চ সজ্জা, নাটকের কস্টিউম নির্বাচন – সবকিছুতে তার শিল্পশৈলীর ছাপ। ভাবি ঝর্না রহমানকে ছাড়া কলেজটি কী করে সামলাবে এত ঝক্কি। এত যে গুণ মানুষটির তিনি মানুষ হিসেবেও অসাধারণ। পুত্রবধূদের সাথে তার আচরণ দেখলে মনে হয় তারা তার আপন মেয়ে; daughter, daughter-in-law নয়। বাইরের দুনিয়ায় এত কিছু সামলে গৃহাভ্যন্তরে সচল থাকাটা বিমুগ্ধকর! পরণকথার আসরে, তার গৃহে গিয়ে এসব প্রত্যক্ষ করেছি!

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..                 

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন