গর্ব ও গৌরবের রক্তস্নাত মাস মার্চ মাস শুরু

0
18

প্রকাশিত:শুক্রবার,১মার্চ ২০১৯। 

বিক্রমপুর খবর: অনলাইন ডেস্ক: আজ  অগ্নিঝরা মার্চের প্রথম দিন। বাঙালির জীবনে নানা কারণে মার্চ মাস অন্তর্নিহিত শক্তির উৎস। অনেক লড়াই সংগ্রামের পর ৭০ এর নির্বাচন। নিরঙ্কুশ বিজয়ের পরও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে তখনও ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি পাকিস্তানের সামরিক জান্তা। ৭১ এর ৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসার কথা ছিলো। কিন্তু মার্চের প্রথম দিন দুপুর ১টায় হঠাৎই বেতার ভাষণে ইয়াহিয়া খান অধিবেশন স্থগিত করে দেন। প্রতিবাদে গর্জে ওঠে পুরো জাতি।

ইয়াহিয়া খানের ভাষণের আগেই হোটেল পূর্বাণীতে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন আওয়ামী লীগের গণপরিষদ সদস্যরা। অধিবেশন স্থগিত হয়ে গেলে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়,২ মার্চ ঢাকায়,৩ মার্চ সারা দেশে হরতাল। আর ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জনসভা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ

আজকের সোহরাওর্য়াদী উদ্যান (সাবেক রেসর্কোস ময়দান)এ- ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ এ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া ঐতহিাসিক ভাষণের সময় মুহূর্মুহু গর্জনে উত্তাল ছিল জনসমুদ্র। লাখ কন্ঠের একই আওয়াজ উচ্চারিত হতে থাকে দেশের এ প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। ঢাকাসহ গোটা দেশে পত পত করে উড়ছিল সবুজ জমিনের উপর লাল সূর্যের পতাকা। রেসকোর্স ময়দানে জনসভাইয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর ডাকে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো মাতৃভূমিকে মুক্তির যুদ্ধে। তিনি পাকিস্তানি শাসকদের হুঁশিয়ারি করে বলেছিলেন, “সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। মরতে যখন শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। রক্ত যখন দিয়েছি,আরো দেবো। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।“

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত একটার অল্প পরে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি সৈন্যরা গ্রেপ্তার করে তার বাড়ি থেকে। ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানিরা বাঙালির কন্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার লক্ষ্যে অপারশেন সার্চলাইট নামে বাঙালি নিধনে নামে। ঢাকার রাস্তায় বেরিয়ে সৈন্যরা নির্বিচারে হাজার হাজার লোককে হত্যা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষককে হত্যা করে।

এর পরের ঘটনাপ্রবাহ প্রতিরোধের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলা হয়। আবালবৃদ্ধবনিতা যোগ দেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। রক্তিম সূর্যের উদয় হয়েছিলো একটি নতুন দেশের বারতা নিয়ে। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বের বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে জাতি লাভ করে স্বাধীনতা।

এ মাসেই জাতি এবার পালন করবে মহান স্বাধীনতার ৪৮ বছর। এ উপলক্ষে মাসের আজ  প্রথম দিন থেকেই শুরু হবে সভা সমাবেশ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নানা আয়োজনে মুখরিত থাকবে গোটা দেশ।

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন