প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার,৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
বিক্রমপুর খবর:অনলাইন ডেস্ক: ভাষা ও সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় একুশে পদক পাচ্ছেন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা ও সাহিত্য-সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২১ গুণীজনকে এবারের একুশে পদকের জন্য মনোনীত করেছে সরকার।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বুধবার বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২০১৯ সালের একুশে পদকের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করে।
এ বছর একুশে পদকের জন্য মনোনীত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা হলেন- অধ্যাপক হালিমা খাতুন (ভাষা আন্দোলন- মরণোত্তর), অধ্যাপক গোলাম আরিফ টিপু (ভাষা আন্দোলন), অধ্যাপক মনোয়ারা ইসলাম (ভাষা আন্দোলন), সুবীর নন্দী (শিল্পকলা- সঙ্গীত), প্রয়াত আজম খান (শিল্পকলা- সঙ্গীত- মরণোত্তর), খায়রুল আনাম শাকিল (শিল্পকলা -সঙ্গীত), লাকী ইনাম (শিল্পকলা- অভিনয়), সুবর্ণা মুস্তাফা (শিল্পকলা- অভিনয়), লিয়াকত আলী খান (শিল্পকলা- অভিনয়), সাইদা খানম (শিল্পকলা- আলোকচিত্র), জামালা উদ্দিন আহমেদ (শিল্পকলা- চারুকলা), ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য (মুক্তিযুদ্ধ), ডক্টর বিশ্বজিৎ ঘোষ (গবেষণা), ড. মাহবুবুল হক (গবেষণা), ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া (শিক্ষা), রিজিয়া রহমান (ভাষা ও সাহিত্য), ইমদাদুল হক মিলন ( ভাষা ও সাহিত্য), অসীম সাহা ( ভাষা ও সাহিত্য), আনোয়ারা সৈয়দ হক (ভাষা ও সাহিত্য), মইনুল আহসান সাবের (ভাষা ও সাহিত্য) ও হরিশংকর জলদাস (ভাষা ও সাহিত্য)।
আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাঁদের হাতে পদক তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রত্যেককে ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, এককালীন দুই লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হবে। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে সরকার ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দিয়ে আসছে।
ইমদাদুল হক মিলনের জন্ম ১৯৫৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর বিক্রমপুরের মেদিনীমণ্ডল গ্রামে নানার বাড়িতে। তাঁর পৈতৃক নিবাস মুন্সীগঞ্জ বিক্রমপুরের লৌহজং থানার পয়সা গ্রামে। বাবার নাম গিয়াসুদ্দিন খান এবং মায়ের নাম আনোয়ারা বেগম। ব্যক্তিজীবনে তিনি তিন সন্তানের জনক।
কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন গল্প, উপন্যাস, নাটক এই তিন শাখাতেই তুমুল জনপ্রিয়। কিশোর বাংলা পত্রিকায় শিশুতোষ গল্প লিখে তাঁর সাহিত্যজগতে আত্মপ্রকাশ। ১৯৭৭ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকায় ছোটগল্প লিখে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে শুরু করেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতাধিক। ঔপন্যাসিক হিসেবে পেয়েছেন কিংবদন্তিতুল্য জনপ্রিয়তা। ‘নূরজাহান’, ‘পরাধীনতা’, ‘বাঁকাজল’, ‘ভূমিকা’, ‘নদী উপাখ্যান’, ‘কালোঘোড়া’, ‘ভূমিপুত্র’, ‘রূপনগর’, ‘কালাকাল’, ‘টোপ’, ‘এক দেশে’, ‘বনমানুষ’, ‘যাবজ্জীবন’, ‘অধিবাস’, ‘নিরন্নের কাল’, ‘পরবাস’, ‘মাটি ও মানুষের উপাখ্যান’ প্রভৃতি তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস। বাংলাদেশ ও ভারতে তাঁর ‘নূরজাহান’ উপন্যাসটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
১৯৯২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন তিনি। এ ছাড়া তাঁর উল্লেখযোগ্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে হুমায়ুন কাদির সাহিত্য পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশু একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কার প্রভৃতি। পেয়েছেন ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার আইআইপিএম-সুরমা চৌধুরী মেমোরিয়াল ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড। ২০০৬ সালে জাপান ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘তাকেশি কায়েকো মেমোরিয়াল এশিয়ান রাইটারস লেকচার সিরিজে’ বাংলা ভাষার একমাত্র লেখক হিসেবে তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন।