সোমবার গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন এ কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।
সভায় ড. কামাল হোসেন বলেন, একজন ব্যক্তি, এমনকি রাষ্ট্রপতিও যদি মনে করেন সংবিধানে কোন ভুল আছে উনার উচিত হবে না কলমের খোঁচায় সেটাকে বদলে দেওয়া। এক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ যখন মত দিবে তখনই সংবিধানে পরিবর্তন আসতে পারে। সংবিধান সব আইনের ঊর্ধ্বে। এটাকে যেনতেনভাবে সংশোধন করা যায় না। সংবিধানের মৌলিক কাঠামোয় সংসদও হাত দিতে পারে না। দেশে সাংবিধানিক শাসন রক্ষা করতে হলে দেশের মানুষকে সবার আগে সজাগ থাকতে হবে। জনগণকেই সংবিধান হেফাজতের দায়িত্ব নিতে হবে। পাহারাদারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট রায় দেওয়ার পরেও যদি জনগণ মনে করে রায়টি সঠিক হয়নি তখন সেটা পুন:বিবেচনার সুযোগ সংবিধানে রাখা হয়েছে।
ড. কামাল বলেন, এখন পর্যন্ত সংবিধানে ১৬/১৭টি সংশোধনী হয়েছে। তাতে মনে হয়েছে এখানে ঘাটতি আছে। অর্থাৎ কিছু সংশোধনী মানুষের কাজে লাগছে না। এগুলো পরিবর্তন আনা দরকার। এই পরিবর্তনের জন্যই সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকতে হয়।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, আমাদের দেশে স্বাধীনতার আইনগত ভিত্তি হলো এই সংবিধান। অনেকে না বুঝে সংবিধান নিয়ে নানা কথা বলছেন। যেমন অনেকেই বলছেন এখন দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট লাগবে। একটা উদাহরণ বের করে দেন যেখানে এককক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট ছিলো সেটা দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টে রূপান্তরিত করা হয়েছে। প্র্যাকটিক্যালি একটা দেশে হয়েছে সেটা বেলজিয়াম।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান সংশোধন করতে পারে না। তবে সংবিধান সংশোধনের সুপারিশ করার ক্ষমতা রয়েছে। সংবিধান সংশোধনের জন্য নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এম. মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সংবিধান তো জনগণের দলিল। যখন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে তারা নিজেদের মত করে সংবিধান সংশোধন করেছে। এটা কেন?