কলকাতাকে পাশ কাটিয়ে ফণীর দিক পরিবর্তন, মধ্যাঞ্চল দিয়ে আঘাত হানার আশঙ্কা

0
21

প্রকাশিত:শনিবার,৪মে ২০১৯।২১ বৈশাখ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ।    

বিক্রমপুর খবর:অনলাইন ডেস্ক:দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় দিক দিয়ে সকাল নাগাদ বাংলাদেশে প্রবেশ করবে সাম্প্রতিককালের অন্যতম ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ফণী। শনিবার ফণীর মূল অংশ বাংলাদেশে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

একই সঙ্গে ফণীর কেন্দ্র থেকে ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার থেকে কমে ৯০ কিলোমিটার হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) দিনগত মধ্যরাতের পর বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জারি করা বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে ভারতের উপকূলীয় উড়িষ্যা, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে ফণী।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বর্তমান স্থান থেকে স্থলভাগের ওপর দিয়ে আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্বদিকে সরে বাংলাদেশ অংশে পৌঁছাবে ফণী। এর অগ্রভাগের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানের আকাশ মেঘলা, দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত ফণীর কেন্দ্র থেকে ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। এই বাতাস দমকা ও ঝড়ো হাওয়া আকারে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিবেগ সম্পন্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল।

সবশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ কমে ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার হয়েছে যা দমকা ও ঝড়ো হাওয়া আকারে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

তবে সমুদ্র বন্দরগুলোতে সতর্কতা সংকেতে এখন পর্যন্ত কোনো পরিবর্তনের ঘোষণা দেয়নি আবহাওয়া অফিস। এখনও মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ফনির দিক পরিবর্তন হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ফলে এটি উপকূলীয় অঞ্চল দিয়ে আঘাত হানবে না। ঘূর্ণিঝড়টি দেশের মধ্যাঞ্চল দিয়ে আঘাত হানার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাতে আগারগাঁওয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

এতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ফনি তার দিক পরিবর্তন করেছে। এটি সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, নড়াইল, মেহেরপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী ও রংপুর হয়ে ভারত চলে যেতে পারে।

এর আগে আগারগাঁওয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক শামছুদ্দীন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, ঘূর্ণিঝড় ফনি বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে নয়, দেশের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। এটি সাতক্ষীরার উত্তর দিয়ে যশোর, ঝিনাইদহ, রাজশাহী ও ময়মনসিংহের দক্ষিণ দিয়ে চলে যেতে পারে। এসব এলাকায় প্রবল বাতাস হতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গ পেরিয়ে আসার পথে আরও দুর্বল হয়ে এই ঘূর্ণিঝড় শনিবার সকাল ১১-১২ টার মধ্যে বাংলাদেশ পৌঁছাতে পারে বলে আবহাওয়াবিদদের ধারণা।

এর আগে ফনির সম্ভাব্য আঘাতের কথা বলা হয়েছিল সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, চাঁদপুর, ফেনী, লক্ষীপুর, নোয়াখালী চট্টগ্রাম। এসব অঞ্চল অতিক্রমকালে ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৯০-১১০ কি.মি বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানানো হয়েছিল। এসব অঞ্চলের মানুষজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ফনির প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত হচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের দুই সমুদ্রবন্দর মোংলা ও পায়রা বন্দরকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ফনির প্রভাবে বজ্রপাতে কিশোরগঞ্জ জেলার তিন উপজেলায় এক শিশুসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় ১ জন ও নেত্রকোনায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন