প্রকাশিত :রবিবার,২২ মার্চ ২০২০ ইং ।। ৮ চৈত্র ১৪২৬ বঙ্গাব্দ।
বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস খুব অল্প সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ১৮৮টি দেশে। এদিকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু গুজব ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বলা হচ্ছে, প্রচুর পরিমাণ পানি পান করলে করোনাভাইরাস শরীর থেকে বের হয়ে যায়। বেশি রোদ পড়লে এ ভাইরাস ছড়াতে পারে না। এছাড়া রসুন, লবঙ্গ, আদাজল খেলে করোনাভাইরাস ভালো হয়। এমনকি বাংলাদেশের একজন হুজুর স্বপ্নে দেখেছেন গভীর রাতে কোন ব্যক্তি যদি থানকুনি পাতা রস পান করেন, তবে তার শরীরে করোনাভাইরাসে সংক্রামণ হবে না। এছাড়া আরো অনেকে বিভিন্ন ওষুধের বিজ্ঞাপনও প্রচার করছেন। যেগুলোর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু গুজব নিয়ে কথা বলেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. খান মো. আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস এরকম একটি রোগ, যার কিনা সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। আবিষ্কার হয়নি প্রতিষেধক। এ রকম একটি সময়ে কিছু অসৎ মানুষ সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। এটা করলে ভালো হবে, ওইটা করলে ভালো হবে। এসব গুজবের কারণে একদিকে সাধারণ মানুষ যেমন আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে, অন্যদিক ভুল চিকিৎসার দিকে ধাবিত হয়ে অসচেতন হয়ে পড়ছে অনেকে। যা আমাদের জন্য আরও বিপদ ডেকে আনতে পারে। ’
‘অনেকে বলছেন বেশি রোদ পড়লে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারবে না। আবার কেউ কেউ বলছেন ভাইরাসটি শীত প্রধান দেশে বা অঞ্চলে বেশি ছড়িয়েছে। শীতের মধ্যে এ ভাইরাস দ্রুত ছড়াতে পারে। দীর্ঘ সময় বেশি তাপমাত্রা থাকলে এটা গলে যায়। ছড়াতে পারে না। আমি বলবো, তাহলে সার্স কিভাবে সৌদি আরবে ছড়ালো, আসলে এসব কথা যৌক্তিক নয়। করোনা ভাইরাসের চরিত্র মার্স এবং সার্স থেকে আদালা। এ ভাইরাসের চরিত্র এখনই শতভাগ বুঝা যায়নি, আরো সময় লাগবে। ’
করোনা ভাইরাস অত্যন্ত সংক্রামক ভাইরাসবাহীত রোগ। যিনি ভূগছেন তার জন্য বিপদজনক, আক্রান্ত ব্যক্তির আশেপাশে যারা থাকবে তারাও ঝুঁকিরমধ্যে থাকবে। বিশেষ করে যারা চিকিৎসা দিবেন কিংবা চিকিৎসার সাথে জড়িত থাকবেন তাদের প্রতিরোধমূলক প্রস্তুতি না থাকলে সবাই ঝুঁকির মধ্যে থাকবেন।
আমি বলবো যে কোন ইনফেকশনে শরীরকে হাইড্রেশন রাখা ভালো। এজন্য পানীয়, ফলের রস কিংবা শরবত খেলে কোন অসুবিধা নেই। এটা একটা ভালো অভ্যাস। এটা সরাসরি ভাইরাসকে কিছু করবে না, তবে শরীরকে তাজা রাখবে এবং পানি শূণ্যতা পূরণ করবে।
তিনি আরো বলেন, থানকুনি পাতা বা হারবাল খেলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ করতে পারবে না। আসলে এসব নিয়ে তো গবেষণা না করে কিছু বলা যাবে না। কোন পাতা বা হারবাল ভাইরাসের বিরুদ্ধে সরাসরি কাজ করে, এটা আসলে মন্তব্য করা ঠিক না। সব পাতারই কোন না কোন গুণ আছে । আমরা প্রকৃত প্রদত্ত অনেক গাছ, লতা পাতা থেকেই অনেক ওষুধ তৈরি করি। এখন কোন উদ্ভিদের কি গুণ তা পরীক্ষা করা ছাড়া বলা যাবে না। কিন্তু আবার স্বপ্নে পেয়ে যাবেন, এরকম স্বপ্নবিধ হওয়া খুব কঠিণ। ইসলাম ধর্মে এরকম জাদু কিছুই নেই। আমাদেরকে বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে প্রমাণ করতে হবে কোন গাছটা আমাদের জন্য উপকারী।
তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে প্রচুর আমিষ খেতে হবে। যেমন মাছ, মাংস, ডিম, ডাল ও দুধ ইত্যাদি খেতে হবে। ফলে এন্টিবডি তৈরি হবে । এতে শরীর ভাইরাসের বিরুদ্ধে সক্রিয় থাকবে। আমাদের আমিষ খেতে হবে। ভিটামিন সি খেতে হবে। প্রচুর পানি খেতে হবে।