আমরা সকলে দায়িত্বশীল না হলে দুর্ঘটনারোধ সম্ভব নয়: জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসে ইলিয়াস কাঞ্চন

0
11
আমরা সকলে দায়িত্বশীল না হলে দুর্ঘটনারোধ সম্ভব নয়: জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসে ইলিয়াস কাঞ্চন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার,২২ অক্টোবর ২০১৯ ইং ।। ৬ই কার্ত্তিক ১৪২৬ বঙ্গাব্দ।

বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : আজ ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস’। ‘জীবনের আগে জীবিকা নয়, সড়ক দুর্ঘটনা আর নয়’-এ প্রতিপাদ্য নিয়ে তৃতীয়বারের মতো সরকারিভাবে দিবসটি পালিত হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর ফার্মগেটের খামারবাড়ী কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় ‘নিরাপদ সড়ক দিবস-২০১৯’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এ সময় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি ও সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ,নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম।

সভায় নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন তার বক্তব্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি ইলিয়াস কাঞ্চন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলন নিয়ে দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে সড়ককে নিরাপদ করার লক্ষ্যে আন্দোলন করে আসছি। আমি ২৬ বছর আগে চট্টগ্রামের অদূরে চন্দনাইশে বান্দরবানে মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় আমার স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চনকে হারিয়েছি। আমি জানি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনিও আপনার স্বজনকে হারিয়েছেন। আমার স্ত্রীর অকাল মৃত্যুতে দু’টি অবুঝ সন্তানকে বুকে নিয়ে শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে আমি নেমে আসি পথে। পথ যেন হয় শান্তির, মৃত্যুর নয়- এই শ্লোগান নিয়ে গড়ে তুলেছি একটি সামাজিক আন্দোলন ‘নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি আপনার বাসায় গিয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করেছি আপনার বাসায় খেয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি যখন আমার এই আন্দোলন শুরু করি তখনও আপনার কাছে গিয়েছিলাম তখন আপনি ক্ষমতায় ছিলেন না,সেই সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আমায় বলেছিলেন আপনি ক্ষমতায় এলে আমার এই আন্দোলন বাস্তবায়নে আপনি সহযোগীতা করবেন। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভুলিনি আপনার কথা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি আন্দোলন শুরু করার পর থেকে প্রতি বছর এই দিনে নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে পালন করে এসেছি। অবশেষে ২০১৭ সালের ৫ জুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার সভাপতিত্বে মন্ত্রী সভার বৈঠকে ২২ অক্টোবরকে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও অনুমোদন দিয়েছেন। সেই বছরের ২২ অক্টোবর বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত হয়। ‘জীবনের আগে জীবিকা নয়, সড়ক দুর্ঘটনা আর নয়’-এ প্রতিপাদ্য নিয়ে এবার তৃতীয়বারের মতো দিবসটি পালিত হচ্ছে আজ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার এই আন্তরিকতার জন্য আমি যে কি বলে আপনাকে ধন্যবাদ জানাব কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব আমি ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা।

ইলিয়াস কাঞ্চন আশাবাদ ব্যাক্ত করে বলেন, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে এই আন্দোলন পরিচালিত হচ্ছে সর্বমহলের এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে সফলতা অতি নিকটে। তিনি সরকারকে বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় আমরা কৃতজ্ঞ। নিরাপদ সড়ক চাই এর দীর্ঘদিনের একটি দাবি নিরাপদ সড়ক দিবসকে জাতীয় করন করা সেটি তিনি পুরন করেছেন। সড়ককে নিরাপদ করতে সরকারের এমন আন্তরিক মনোভাব সব সময় যেন অব্যহত থাকে ইলিয়াস কাঞ্চন সেই আশা ব্যক্ত করেন।

সেই সাথে ইলিয়াস কাঞ্চন দেশবাসি সকলকে আহবান জানান সড়ক দুর্ঘটনারোধে দিবসটি পালনে সকলকে এগিয়ে আসতে। এবং সকলকে সচেতন হয়ে পথ চলতে। নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, এই দায়িত্বটা শুধু সরকারের একার না বা গাড়ি চালকের না, পথচারী থেকে শুরু করে সকল জনগণের, সকল দেশের মানুষের, সকল নাগরিকের দায়িত্ব। কাজেই যার যার যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব সবাই পালন করবেন। আমরা সকলে সচেতন হলেই দেশ থেকে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হবে।

ইলিয়াস কাঞ্চন আরো বলেন আমরা ৯০% মানুষ আজও সড়কে নিয়ম মেনে পথ চলিনা। আমাদের এই নিয়ম মানার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। ইলিয়াস কাঞ্চন সেই সাথে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান দেশেও সকল প্রকার যানবাহন চালকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহন করতে। এবং শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকে ট্রাফিক আইন মেনে চলার নিয়ম কানুন সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয় তুলে ধরতে।

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন