প্রকাশিত: প্রকাশিত: শনিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২১ইং।। ২৭ অগ্রাহায়ণ ১৪২৮ বঙ্গাব্দ (হেমন্ত কাল)।। ৬ জামাদিউল আউয়াল ১৪৪৩ হিজরী।।
বিক্রমপুর খবর : অফিস ডেস্ক : আজকের দিনে ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয় মুন্সিগঞ্জ। মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধে এই দিন পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা শুনে এ অঞ্চলের মুক্তিপাগল মানুষেরা মুন্সিগঞ্জ সদর থানার হানাদার ক্যাম্পে হামলা চালায়। দেশকে মুক্ত করার প্রত্যয়ে থানার হানাদার ক্যাম্পে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে জয় বাংলা স্লোগানে ওড়ায় বাংলাদেশের পতাকা।
মুন্সিগঞ্জের যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ চন্দ্র সাহা। সে জন্য তাকে দিতে হয়েছে চরম মূল্য। রাজাকারদের সহযোগিতায় ১৪ মে তার বাবা ও ভাইসহ পরিবারের ১৪ জনকে ধরে নিয়ে জেলা সদরের কেওয়ার এলাকার একটি খালের পাশে নিয়ে একসঙ্গে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হয়। আজও সে কথা ভুলতে পারেনি তার পরিবার।
বীর প্রতীক রফিকুল ইসলাম জানান, ৯ মে গজারিয়া উপজেলায় ইতিহাসের নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায় হানাদার বাহিনী ও রাজাকাররা। ফজরের আজানের সময় লঞ্চঘাটে থামে পাকিস্তানি নৌবহর। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হত্যা করা হয় ৩৬০ জন নিরীহ মানুষকে।
মুন্সীগঞ্জ শহর সংলগ্ন রতনপুর গ্রামে ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর চুড়ান্ত যুদ্ধ হয়। পাক সেনাদের তিনটি বড় দলের সঙ্গে সহস্রাধিক মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে অংশ নেয়। সেদিন ধলেশ্বরী নদীতে থাকা গানবোট থেকে মর্টার সেলিং করছিল পাকসেনারা। মিত্র বাহিনীর বিমান বহর এসে পড়লে পাকসেনারা পিছু হটে। পরে মিত্র বাহিনীর আক্রমণে পাক সেনাদের গানবোট বিধ্বস্ত হয়। এতে ১৪-১৫ জন স্থানীয় নিরীহ মানুষ মারা যায়। এ যুদ্ধে ৩ পাকসেনার মরদেহ পাওয়া যায়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আনিসুজ্জামান আনিস জানান, যুদ্ধের নয় মাস জেলার বিভিন্ন স্থানে চলে ছোট-বড় অভিযান। লৌহজংয়ের গোয়ালী মান্দ্রায় সম্মুখযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের পরাজিত করা হয়। চূড়ান্ত বিজয়ের লক্ষ্যে ১১ ডিসেম্বর ভোর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা মুন্সিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন দিক থেকে হানাদার বাহিনীর সবচেয়ে বড় ক্যাম্প হরগঙ্গা কলেজ ছাত্রাবাসের দিকে এগোতে থাকেন।
ততক্ষণে বর্বর পাকিস্তানি হায়েনারা বুঝতে পারে তাদের সময় ফুরিয়ে গেছে। দুপুরের আগেই ক্যাম্পের সব দিক ঘিরে ফেলেন মুক্তিযোদ্ধারা।
মুক্তির নেশায় মেতে ওঠে জেলার দামাল ছেলেরা। ১০ ডিসেম্বর রাতে তারা সম্মিলীত আক্রমন চালালে পিছু হটতে থাকে পাকবাহিনী। শহর ছেড়ে মুক্তারপুর ধলেশ্বরী নদীতে ঠাঁই নেয় শক্রবাহিনী। রাতে কয়েক ঘন্টা উভয় পক্ষের সংঘর্ষ হলে এক পর্যায়ে পালিয়ে যায় পাকবাহিনীর দল। মুক্ত হয় মুন্সিগঞ্জ! শক্রমুক্ত হয় পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী ইছামতি বিধৌত মুন্সিগঞ্জ বিক্রমপুর।
আজ ১১ ডিসেম্বর ৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী থেকে বীরমুক্তিযোদ্ধারা মুন্সীগঞ্জকে মুক্ত করেছিল ।আজ মুন্সীগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।
(বিজ্ঞাপন) https://www.facebook.com/3square1
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর-আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন-বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’