প্রকাশিত:মঙ্গলবার,১ জুন ২০২১ইং।।১৮ই জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ বঙ্গাব্দ (গ্রীস্মকাল)।
বিক্রমপুর খবর : অফিস ডেস্ক : স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার ও জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পাওয়া বাংলাদেশি সাঁতারু ব্রজেন দাসের মৃত্যুদিবস আজ।
তিনিই প্রথম দক্ষিণ এশীয় ব্যক্তি, যিনি সাঁতার কেটে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন। ১৯৫৮ সালের ১৮ আগস্ট তিনি এ কৃতিত্ব অর্জন করেন। তিনি সর্বমোট ছয়বার ইংলিশ চ্যানেল পাড়িদেন। এর মধ্যে ১৯৬১ সালে ১০ ঘণ্টা ৩৫ মিনিটে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে তিনি বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন।
ব্রজেন দাসের জন্ম ঐতিহাসিক বিক্রমপুরের সিরাজদিখান উপজেলার কুচিয়ামোড়া গ্রামে। তার বাবার নাম হরেন্দ্রকুমার দাস ও মা বিমলা দাস। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রামের পাঠশালাতেই শুরু হলেও পরবর্তীকালে গুরুজনদের সঙ্গে ঢাকা চলে আসেন এবং কে এল জুবিলি হাইস্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকেই ১৯৪৬ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় পাস করেন। কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে যথাসময়ে আইএ এবং বিএ পাস করেন। এরপর ঢাকায় ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি। ছেলেবেলা থেকেই সাঁতারে তার খুবই ঝোঁক ছিল।
হাতেখড়ি হয় ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীতে সাঁতার কেটে। আন্তঃবিদ্যালয় খেলাধুলায় সাঁতার প্রতিযোগিতায় সর্বদাই প্রথম স্থান দখল করতেন। কলকাতায় কলেজ জীবনে সাঁতারের দিকে তার বিশেষ আগ্রহ জন্মায়। কারণ তখন বাড়ির কাছাকাছি ফুটবল-ক্রিকেট খেলার মাঠ না থাকলেও সুইমিংপুল ছিল। সাঁতারের বিভিন্ন কায়দা, নিয়ম-কানুন ইত্যাদি তিনি সেখানেই শেখেন। ১৯৫৮ সালে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমের সাঁতার প্রতিযোগিতায় মোট ২৩টি দেশ অংশ নেয়।
উপমহাদেশ থেকে অংশ নিয়েছিলেন একমাত্র ব্রজেন দাস। ১৯৫৮ সালের ১৮ আগস্ট প্রায় মধ্যরাতে ফ্রান্সের তীর থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। প্রচ- প্রতিকূল পরিবেশে সাঁতার কেটে পর দিন বিকেলে প্রথম সাঁতারু হিসেবে ইংল্যান্ড তীরে এসে পৌঁছান ব্রজেন দাস। ব্রজেন দাস সর্বমোট ৬ বার ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন। ১৯৫৮, ১৯৫৯, ১৯৬০ এবং ১৯৬১ সালে। ১৯৬১ সালে ১০ ঘণ্টা ৩৫ মিনিটে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে তিনি বিশ্বরেকর্ড গড়েন। এর আগে ব্রজেন দাস ১৯৫২ সালে পশ্চিমবঙ্গে ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন। পূর্ব পাকিস্তানের জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় ১০০, ২০০, ৪০০ ও ১৫০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতারে তিনি ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৬ সাল অবধি পর পর ৪ বছর চ্যাম্পিয়ন হন।
এছাড়া তিনি ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান জাতীয় প্রতিযোগিতায় ১০০ ও ৪০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতারের শিরোপা জেতেন। ১৯৫৬ সালে তিনি অলিম্পিক গেমসে পাকিস্তান সাঁতার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৫৩ সালে এদেশে সাঁতারের নিয়মিত অনুশীলন, বার্ষিক প্রতিযোগিতা ইত্যাদি প্রধানত তারই উদ্যোগে শুরু হয়। ইস্ট পাকিস্তান স্পোর্টস ফেডারেশনকে তিনিই এ ব্যাপারে উৎসাহী ও উদ্যোগী করে তুলেছিলেন। ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান অলিম্পিকে সাঁতার প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার ও সর্বমোট চারটি খেলায় স্বর্ণপদক লাভ করলেও ১৯৫৬ সালে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অলিম্পিকে তাকে পাঠানো হয়নি। ইংলিশ চ্যানেল জয়ের মাধ্যমে তিনি এই অপমানের শোধ নিতে বদ্ধপরিকর হয়ে সাধনা চালিয়ে যান এবং সফলও হন। তিনি ১৯৯৮ সালের ১ জুন মারা যান।
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর-আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন-বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’
Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com
আমাদের পেইজ এ লাইক দিন শেয়ার করুন। https://www.facebook.com/BikrampurKhobor