অহংকারের পরিণতি জাহান্নাম

0
12
অহংকারের পরিণতি জাহান্নাম

প্রকাশিত: শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২০ইং ।। ৪ঠা পৌষ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)। ৩রা জমাদিউল-আউয়াল,১৪৪২ হিজরী।বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : অহংকার এমন এক জিনিস যা নিজেকে অন্যের চেয়ে বড়, উত্তম, ক্ষমতাধর মনে করা। নিজেকে বড় মনে করে কাউকে ছোট করা বা হেয় প্রতিপন্ন করা। মানুষের কাজের মাধ্যমে এটার প্রকাশ ঘটে। এটা করার মাধ্যমে মানসিক তৃপ্তি পেলেও এ কাজের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। কোরআন ও হাদীসেও অহংকারীর শাস্তি সম্পর্কে প্রচুর বর্ণনা রয়েছে। তাদের শেষ পরিণত হচ্ছে জাহান্নাম। শুধু জাহান্নামে নয়, দুনিয়াতেও এর শাস্তি ভোগ করতে হয় অহংকারী ব্যক্তিকে। এছাড়া মানুষের ইবাদতকেও নষ্ট করে দেয় অহংকার। যারা অহংকার করে আল্লাহ তাআলা তাদের ভালোবাসেন না, পছন্দও করেন না। অহংকার করার কারণে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়।

অহংকার প্রসঙ্গে কোরআনের বিভিন্ন স্থানে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চই আল্লাহ এমন লোককে পছন্দ করেন না, যে বড় হওয়ার গৌরব করে ও অহংকার করে।’- সুরা আন নিসা: ৩৬

কোরআনের অন্যত্র আরও ইরশাদ হয়েছে, মানুষের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখে কথা বলো না এবং পৃথিবীতে গর্বের সঙ্গে চলবে না। নিশ্চই আল্লাহ কোনও বড়াইকারী ও অহংকারকারীকে পছন্দ করেন না।’- সুরা লোকমান: ১৮

এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার রয়েছে, সে বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না। এক ব্যক্তি বললেন, কোনও ব্যক্তি পছন্দ করে তার কাপড় সুন্দর হোক, তার জুতা সুন্দর হোক (তাও কি অহংকার?)। হযরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। প্রকৃতপক্ষে অহংকার হলো- আল্লাহর গোলামি থেকে বেপরোয়া হওয়া এবং মানুষকে অবজ্ঞা করা।’ -সহিহ মুসলিম

অন্য হাদিসে আরও ইরশাদ হয়েছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘অহংকারী ও অহংকারের মিথ্যা ভানকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’ -সুনানে আবু দাউদ

কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এমন কত জনপদ আমি ধ্বংস করে দিয়েছি, সেখানকার লোকেরা ধন-সম্পদের অহংকার করত। এই যে তাদের বাড়িঘর পড়ে আছে, যেখানে তাদের পর কম লোকই বসবাস করেছে। শেষ পর্যন্ত আমি (এ সবেরই) ওয়ারিশ হয়েছি।’ -সুরা আল কাসাস: ৫৮

মুমিনদের উদ্দেশে কোরআনে আল্লাহ বলছেন, ‘মাটির বুকে গর্বের সঙ্গে চলবে না। নিশ্চয়ই তুমি কখনো পদচাপে জমিনকে বিদীর্ণ করতে পারবে না। আর পাহাড়ের সমান উঁচুও হতে পারবে না।’ -সুরা বনি ইসরাইল: ৩৭

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অহংকারবশত স্বীয় বস্ত্র মাটির ওপর দিয়ে টেনে চলে কিয়ামতের দিন আল্লাহতায়ালা তার দিকে তাকাবেন না। তখন হজরত আবু বকর (রা.) বলেন, আমার লুঙ্গি অসতর্ক অবস্থায় ঢিলা হয়ে পায়ের গিরার নিচে চলে যায়, যদি না আমি তা ভালোভাবে বেঁধে রাখি। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তুমি তা অহংকারবশত করো না।’ -সহিহ বুখারি

এ বিশ্ব ভ্রমাণ্ডে যত মানুষকে আল্লাহ তাআলা দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন, কাউকে বেশি সম্পদ দিয়েছেন আবার কাউকে কম সম্পদ দিয়েছেন। পূর্বে যারা অহংকার করেছে আল্লাহ তাদের ধ্বংস করে দিয়েছেন। যারা নিজেকে বড় মনে করতো তারা অচিরেই ধ্বংস হয়েছে। আল্লাহ তাআলা তার বান্দাকে পরীক্ষা করার জন্য ধন সম্পদ বেশি দেন। আবার কাউকে কম দেন। কিন্তু যারা বিত্তবান তারা আল্লাহর আদেশ নির্দেশ ভুলে দুনিয়ার মোহে পড়ে অন্যকে হেয় প্রতিপন্ন করে থাকেন। আমরা যেন অহংকার করা থেকে বিরত থাকতে পারি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়েত দিন। আমীন।

নিউজটি শেয়ার করুন .. ..                  

 ‘‘আমাদের বিক্রমপুরআমাদের খবর

আমাদের সাথেই থাকুনবিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন