প্রকাশিত: শুক্রবার,৮ জানুয়ারি ২০২১ইং।। ২৪শে পৌষ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ(শীতকাল।। ২৩শে জমাদিউল-আউয়াল,১৪৪২হিজরী।
বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : প্রকৃতিতে বিরাজ করছে শীত ঋতু। নগরজীবনে এখনো শীতের তেমন প্রভাব না পড়লেও গ্রামীণ পর্যায়ে শীত পড়ছে পুরোদমে। নানা কারণে এই ঋতু অনেকেরই প্রিয়। বিভিন্ন জাতের শাক-সবজি, হরেক রকম পিঠাপুলি, লেপ-কম্বলের নিচে আরামদায়ক দীর্ঘ ঘুম আর আয়েশি গরম কাপড়চোপড়ে শীতকাল উপভোগ করে তারা। কিন্তু উপভোগ্য এই ঋতু একশ্রেণির মানুষের জন্য নিদারুণ কষ্ট নিয়ে আসে। গ্রামাঞ্চলের বেড়ার ঘরে, জীর্ণশীর্ণ বস্তিতে কিংবা খোলা আকাশের নিচে উষ্ণ বস্ত্রহীন দুঃসহ রাত পার করতে হয় কিছু মানুষকে। রাষ্ট্রের পাশাপাশি মানুষ হিসেবে এদের নিয়ে আমাদেরও ভাবতে হবে। তাই শীতের পোশাক থাকা সত্ত্বেও নতুন আরেকটি পোশাক কেনার আগে আমাদের উচিত অসহায় মানুষের শীতকষ্ট উপলব্ধি করা। অন্তত পুরনো পোশাক দিয়ে হলেও শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যে মুসলমান অন্য কোনো মুসলমানকে বস্ত্রহীন অবস্থায় বস্ত্র দান করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে সবুজ বর্ণের পোশাক পরাবেন। খাদ্য দান করলে তাকে জান্নাতের ফল খাওয়াবেন, পানি পান করালে জান্নাতের শরবত পান করাবেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬৮২)
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলমান অপর মুসলমানকে কাপড় দান করলে যতক্ষণ ওই কাপড়ের টুকরা তার কাছে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত দানকারী আল্লাহর হেফাজতে থাকবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৪৮৪)
চলতি শীতে করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তা ছাড়া এ সময়ে শীতজনিত প্রাদুর্ভাব যেমন—সর্দি-কাশি, হাঁপানিসহ নানা রোগে আক্রান্ত থাকে বেশির ভাগ মানুষ। তাই রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের পাশাপাশি অসহায় মানুষের চিকিৎসাসেবা প্রদানে বিত্তশালীদের এগিয়ে আসা উচিত। প্রভাবশালী হাসপাতাল মালিকরা অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্পের মাধ্যমে ফ্রি চিকিৎসা সহায়তা দিতে পারেন। কারণ মানুষের অসুস্থতার আপদ দূর করলে আল্লাহ দুনিয়া-আখিরাতে তার বিপদাপদ দূর করে দেন। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের দুনিয়াবি সমস্যাগুলোর একটি সমাধান করে দেয়, আল্লাহ তাআলা তার আখিরাতের সংকটগুলোর একটি মোচন করবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবগ্রস্তের অভাব মোচনে সাহায্য করবে, আল্লাহ তাআলাও তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে স্বাচ্ছন্দ্য দান করবেন। (মুসলিম, হাদিস : ২৬৯৯)
শীতের তীব্রতা খুব বেশি বেড়ে গেলে কিংবা টানা শৈত্যপ্রবাহ থাকলে আমরা শীতবস্ত্র বিতরণের প্রয়োজন অনুভব করি। দান করার ইচ্ছা থাকলে শীতের শুরুতেই অসহায়দের শীত উপকরণ পৌঁছে দেওয়া উচিত। এতে শীতার্তদের কষ্ট লাঘব হয়। তা ছাড়া হাদিসে যথা সময়ে দ্রুত দান করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এক সাহাবি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! কোনো দানে সওয়াব বেশি পাওয়া যায়? তিনি বলেন, সুস্থ ও কৃপণ অবস্থায় তোমার দান করা, যখন তুমি দারিদ্র্যের আশঙ্কা করবে ও ধনী হওয়ার আশা রাখবে। দান করতে এ পর্যন্ত বিলম্ব করবে না, যখন প্রাণবায়ু কণ্ঠাগত হবে, আর তুমি বলতে থাকবে, অমুকের জন্য এতটুকু, অমুকের জন্য এতটুকু, অথচ তা অমুকের জন্য হয়ে গেছে।’ (বুখারি, হাদিস : ১৪১৯)
আল্লাহ আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর তাওফিক দান করুন।
নিউজটি শেয়ার করুন .. ..
‘‘আমাদের বিক্রমপুর–আমাদের খবর।
আমাদের সাথেই থাকুন–বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’