অনলাইনে বোমা তৈরির প্রশিক্ষক সেই ফোরকান গ্রেফতার

0
8
সিটিটিসি’র হাতে গ্রেফতার জাহিদ হাসান (মাঝ খানে শার্ট পরিহিত)

প্রকাশিত:বুধবার ১১ আগস্ট ২০২১ইং।। ২৭শে শ্রাবন ১৪২৮ বঙ্গাব্দ (বর্ষাকাল।। ১মহরম, ১৪৪৩ হিজরী।।

বিক্রমপুর খবর : অনলাইন ডেস্ক : নব্য জেএমবি’র সামরিক শাখার প্রধান প্রশিক্ষক ও বোমা প্রস্তুতকারকসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

গ্রেফতারকৃতরা হলো— মো. জাহিদ হাসান ওরফে রাজু ওরফে ইসমাঈল হাসান ওরফে ফোরকান, সাইফুল ইসলাম মারুফ ওরফে বাসিরা ও মো. রুম্মান হোসেন ফাহাদ ওরফে আব্দুল্লাহ। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে বিস্ফোরক পদার্থ, ঢাকনাযুক্ত জিআই পাইপ, রিমোট কন্ট্রোল ডিভাইস, লোহার বল, সাংগঠনিক কাজে ব্যবহৃত ৩টি মোবাইল ফোন ও একটি ট্যাব উদ্ধার করা হয়।

বুধবার (১১ আগস্ট) দুপুর ১২টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে  সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান।

সিটিটিসির প্রধান বলেন, ‘গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত মো. জাহিদ হাসান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে অনার্স সম্পন্ন করেছে। জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হওয়ায় এবং হিজরত করায় মাস্টার্স সম্পন্ন করতে পারেনি। ২০১৬ সালে অনলাইনে ‘হোয়াইট হাউজের মুফতি’ নামে আইডি’র মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে নব্য জেএমবি’র তৎকালীন আমির মুসার হাত ধরে সে এই সংগঠনে যোগদান করে। আমির মুসার সঙ্গে কাজ করার সুবাদে সংগঠনের ওই সময়ের শীর্ষস্থানীয় জঙ্গিদের নজরে আসে জাহিদ  এবং তাদের সার্বক্ষণিক সঙ্গী হিসেবে কাজ করে। রসায়নে পরদর্শী হওয়ার কারণে তার মেধা এবং সাহসের জন্য তাকে এই সংগঠনের সামরিক শাখার সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। রসায়নের ছাত্র হওয়ার সুবাদে সে অল্পদিনে গ্রেনেড ও বোমা তৈরিতে অত্যন্ত দক্ষ হয়ে ওঠে এবং নিত্য নতুন কৌশলে আইইডি (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) প্রস্তুত করে। এই সংগঠনের যারা বোমা ও গ্রেনেড তৈরি করতো তাদেরকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিতো সে।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি তথা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে নব্য জিএমবি’র শীর্ষস্থানীয় জঙ্গিরা গ্রেফতার/নিহত হলে এই সংগঠনটি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। এসময়  জাহিদ গ্রেফতার এড়ানোর জন্য আত্মগোপনে চলে যায়। পুনরায় সে নতুন আমিরের নেতৃত্বে নব্য জিএমবিকে সংগঠিত করার উদ্যোগ নেয়। তারই অংশ হিসেবে অনলাইনে আইডি খোলার মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যারা অত্যন্ত সাহসী ও সামরিক বিভাগে কাজ করতে আগ্রহী, তাদের মধ্য থেকে বাছাইকৃত সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের টাইম ও রিমোট কন্ট্রোল বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিতো। সে সংগঠনটির কার্যক্রম বিস্তৃত করার লক্ষ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একাধিকবার মিটিং করে। শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের আওতাধীন মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়াম থেকে কারাতে প্রশিক্ষণও গ্রহণ করে। এমনকি কোনও কেমিক্যাল সাপ্লাই কোম্পানিতে চাকরি করে সেখান থেকে এক্সপ্লোসিভ তৈরির উপাদান নিয়ে আইইডি বানানোর পরিকল্পনা ছিল তার। সর্বশেষ সে ড্রোন বানানোর পরিকল্পনা করেছিল। ড্রোনের সঙ্গে এক্সপ্লোসিভ যুক্ত করে কোনও জায়গায় আক্রমণের পরিকল্পনার পাশাপাশি সামরিক শাখার প্রধান নিযুক্ত হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, পুলিশ বক্সে হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে সে জড়িত ছিল। সংগঠনের আমিরের নির্দেশে যেসব হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেসকল হামলায় সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছে জাহিদ।’

সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘গ্রেফতারকৃত অপর অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম মারুফ বোমা তৈরির একজন দক্ষ  কারিগর। সে অনলাইনে জাহিদের কাছ থেকে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। বেশ কয়েকটি বোমা হামলার ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়ে সে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। সাইফুল ইসলাম মারুফ এবং গ্রেফতারকৃত অপর অভিযুক্ত মো. রুম্মান হোসেন ফাহাদসহ সংগঠনের সিদ্ধান্তে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার লক্ষ্যে বান্দরবান এলাকায় হিজরত করে। সংগঠনের ফান্ড তৈরির নিমিত্তে ইলেকট্রিক শক থেরাপির মাধ্যমে অজ্ঞান করে ছিনতাই ও ডাকাতি করার জন্য টঙ্গী থানার রেলগেট এলাকায় রুম ভাড়া নেয়। ১০ আগস্ট রাজধানীর কাফরুল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করে সিটিটিসির বোম ডিসপোজাল ইউনিটের একটি টিম।’

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় মামলা  হয়েছে। তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

   ‘‘আমাদের বিক্রমপুর-আমাদের খবর।

আমাদের সাথেই থাকুন-বিক্রমপুর আপনার সাথেই থাকবে!’’

Login করুন : https://www.bikrampurkhobor.com

আমাদের পেইজ লাইক দিন শেয়ার করুন।        

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার কমেন্টস লিখুন
দয়া করে আপনার নাম লিখুন